সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ‌্যার দিকে বিছনাকান্দি সীমান্তে মরকি টিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ইউনিয়নের কুলুমছড়া পার এলাকার জাকির মিয়ার ছেলে ইয়ামিন মিয়া ও একই এলাকার আক্তার হোসেন। সম্পর্কে তাঁরা চাচা–ভাতিজা।

স্থানীয় সূত্র ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, বিছনাকান্দি ইউনিয়নের বিছনাকান্দি মর‌কি টিলার ১২৬৪ নম্বর মেইন পিলার এলাকা দিয়ে গতকাল কয়েকজন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারত সীমান্তে প্রবেশের পর সেখানকার খা‌সিয়াদের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ হয়। এ সময় খা‌সিয়াদের ছোঁড়া গুলিতে বাংলাদেশের দুজন আহত হন। পরে তাঁরা বাংলাদেশ সীমান্তে পা‌লিয়ে আসেন।

সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্থানীয় ও গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরে‌ছি, গতকাল বিকেলে কয়েকজন বাংলাদেশি বিছনাকা‌ন্দি এলাকায় ভারত সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশ করে‌ছিলেন। সেখানে ভারতীয় খা‌সিয়াদের সঙ্গে টাকাপয়সা নিয়ে তাঁদের বিরোধ হয়। এতে ভারতীয় খা‌সিয়ারা তাঁদের লক্ষ‌্য করে গু‌লি ছোড়েন। এ সময় দুজন ছররা গু‌লিতে আহত হয়েছেন। আহতসহ অন‌্যরা বাংলাদেশ সীমান্তের অভ‌্যন্তরে ফিরেছেন।’

নাজমুল হক আরও বলেন, আহত ব্যক্তিদের পাঁয়ে ছররা গুলি লেগেছে। তাঁরা আত্মগোপনে থেকে চি‌কিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা শঙ্কা মুক্ত রয়েছেন। এ বিষয়ে বি‌জি‌বি আরও খোঁজ নিচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ