ঢাকার আজিমপুরের বিসি দাস স্ট্রিটে তাহিয়া তাসনিম ওরফে ফিমা (১৯) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওই ঘটনা ঘটে। গৃহবধূর পরিবার তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করেছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তাহিয়ার বাবা তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেড় বছর আগে নিউ পল্টনের বাসিন্দা ব্যবসায়ী কাজী সাগরের সঙ্গে তাহিয়া তাসনিমের বিয়ে হয়। কাজী সাগর স্বর্ণের ব্যবসা করেন। তাহিয়াকে বিয়ের আগে সাগর আরেকটি বিয়ে করেছিলেন, তা তাঁরা জানতেন না। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে কাজী সাগরের পারিবারের সঙ্গে তাঁদের মনোমালিন্য দেখা দেয়।
তাহিয়ার বাবা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে তাহিয়াকে স্বামীর বাড়ি থেকে ৪১/২ বিসি দাস স্ট্রিটে বাবার বাসায় নিয়ে আসা হয়। গতকাল রাত ৯টার দিকে তাঁরা বাইরে যান। বাসায় ফিরে ডাকাডাকি করেও তাহিয়াকে পাননি। পরে তাঁরা চাবি দিয়ে দরজার তালা খুলে দেখতে পান তাহিয়া গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাহিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক মো.
তাজুল ইসলাম বলেন, তাঁদের অনুপস্থিতে কাজী সাগর বাসায় ঢুকে তাহিয়া তাসনিমকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। তাঁর বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় তিনি হত্যা মামলা করবেন। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে স্নাতক (সম্মানে) শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
আজ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তাহিয়ার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম।
সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, তাহিয়ার বাম চোখের নিচে ফোলা ও জখমের চিহ্ন রয়েছে। নাকের ওপরের অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলার ডান পাশের ওপরের অংশ নখের আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে। গলার দুই পাশে অর্ধা চন্দ্রাকৃতির কালো দাগ রয়েছে। ডান পায়ের গোড়ালিতে সামান্য জখম রয়েছে।
লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যাশৈনু প্রথম আলোকে বলেন, এ ব্যাপারে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন বাংলাদেশ গড়তে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। এ জন্য তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু করণীয় নিয়ে যাত্রা শুরু করা। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।’
‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে গড়ব এ দেশ নতুন করে’ স্লোগানকে সামনে রেখে এবারের মে দিবস পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা পাঁচ শ্রমিকের পরিবারের হাতে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।