আওয়ামী লীগ পরিষ্কারভাবে একটি দেশবিরোধী শক্তি এবং ভারতের এজেন্ট। তারা যদি আন্দোলনে নামে, সেটাকে আমরা আন্দোলন বলব না। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নামবে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের যে বলপ্রয়োগের অধিকার আছে, সেটা থাকবে।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে দলের সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এ কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আগামীকাল রোববার প্রাথমিক সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। নির্বাচনে ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী ও ১৬ বছর বয়সে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব দেবে বলে জানায় এনসিপি।

গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের কাছ থেকে কী ধরনের বাংলাদেশ দেখতে চান, এমন প্রশ্ন করে সংস্কারের বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, সেখানে একজন শহীদের মা বলেছেন, তিনি এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে তাঁর ছেলে আন্দোলনে নামলে পুলিশ গুলি করতে পারবে না।

এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনে নামলে কী হবে? জবাবে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো আন্দোলনে আসবে না। আওয়ামী লীগ যেটা করবে, সেটাকে তো আমরা আন্দোলন বলব না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আন্দোলনের তো একটা সংজ্ঞা আছে।’

সারোয়ার তুষার আরও বলেন, ‘আমরা বলতে চাচ্ছি, বিভিন্ন দাবিদাওয়াকেন্দ্রিক যে আন্দোলন—একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আপনি বেতনের জন্য আন্দোলনে নামছেন, কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছেন কিংবা অন্যান্য যেকোনো ইস্যু, একটা কালাকানুন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামছেন—এগুলোকে আমরা আন্দোলন বলি।’তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিষ্কারভাবে একটি দেশবিরোধী শক্তি এবং ভারতের এজেন্ট। তারা যদি আন্দোলনে নামে, সেটাকে আমরা আন্দোলন বলব না। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নামবে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের যে বলপ্রয়োগের অধিকার আছে, সেটা থাকবে।’

আগামীকাল রোববার বেলা দুইটার সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের কাছে এনসিপির প্রতিনিধিদল সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে। তারপর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির আলোচনা হবে। আগামীকাল প্রস্তাব জমা দিলে ঈদের পর এনসিপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দলটি জানিয়েছে।

আরও পড়ুনজেন–জিদের ভোটার করতে চায় এনসিপি, ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী, ১৬ বছরে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রস ত ব এনস প র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে একমত হলেও বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় এনসিপি

সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) বিষয়ে একমত পোষণ করলেও এটি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঐকমত্যের বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন, যার পদ্ধতি এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। ফলে একটি অস্পষ্টতা থেকেই গেছে।’

আজ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আখতার হোসেন।

উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সেই রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনকে কার্যকর আলোচনা জন্য আহ্বান জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এনসিপির পক্ষ থেকে উচ্চকক্ষে সংবিধান সংশোধনের জন্য ‘টু-থার্ডস মেজরিটি’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিতরা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন—এমন কথা বলা হলেও, বিশ্বজুড়ে এফপিটিপি (যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান) ও পিআর উভয় পদ্ধতিতেই বৈধতা রয়েছে। পিআর পদ্ধতিতেও জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।

কমিশনের প্রস্তাবিত বাস্তবায়ন সময়সীমাকে এনসিপি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানান দলটির সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সিদ্ধান্তগুলো তৎক্ষণাৎ কার্যকর হোক।’ তিনি বলেন, ‘১ শতাংশ ভোট পেলেও যেন একটি দল একজন করে প্রতিনিধি উচ্চকক্ষে পাঠাতে পারে—এটি বহু মতের ও বহু দলের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। আইন পাসের আগে যদি উচ্চকক্ষে আলোচনা হয়, তাহলে ভুলত্রুটি ধরার সুযোগ তৈরি হবে এবং সংসদের বাইরে জনপরিসরেও আইন নিয়ে আলোচনা গড়ে উঠবে।’

‘বর্তমানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যেভাবে দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে, সেটা যেন না হয়’ উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব থাকলে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।’

উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘অনেকে বলছেন, পিআর পদ্ধতিতে হলে তাঁরা উচ্চকক্ষ চান না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—তাঁরা আদৌ উচ্চকক্ষ চান কি না। আমরা বিশ্বাস করি, ১০০ আসনের এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশ একদল বা দুই দলের কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে বহু দলের অংশগ্রহণে পরিচালিত হবে। এতে গণতন্ত্রচর্চার নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।’

আলোচনার সময় সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক নিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আখতার হোসেন। যদিও কিছু দল ভিন্নমত পোষণ করেছে, তবে সার্বিকভাবে একটি ঐকমত্যের জায়গায় কমিশন পৌঁছেছে বলেও তিনি দাবি করেন।

আলোচনার শেষভাগে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে, যেখানে প্রতিনিধিরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। এ কক্ষে নিম্নকক্ষ থেকে পাঠানো বিল সর্বোচ্চ দুই মাস আটকে রাখা যাবে এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ‘সিম্পল মেজরিটি’র কথা বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৌলিক সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কার কী অবস্থান
  • সংবিধানের চার মূলনীতি প্রশ্নে কমিশনের সভা বর্জন বাম দলগুলোর
  • উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে একমত হলেও বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় এনসিপি
  • সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের, সদস্য মনোনীত হবেন পিআর পদ্ধতিতে
  • ‘জুলাই সনদের’ দাবিতে শাহবাগে অবরোধ, যানজট
  • ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করলে এনসিবি তা করবে: আখতার হোসেন
  • খসড়া নিয়ে ৩ দলের আপত্তি
  • প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে
  • ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার প্রত্যাশা
  • ‘বাদ দেওয়ার চেষ্টা হলেও ঘোষণাপত্রে নিশ্চিত হবে জুলাই ছাত্র-জনতার ন্যায্য স্বীকৃতি’