সকল মসজিদে ‘বঙ্গবন্ধু’র আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করার অনুরোধ জানিয়ে পত্র দেওয়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব নমিতা দে’কে ওএসডি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই কর্মকর্তাকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব নমিতা দে কে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের সচিব নমিতা দে’র স্বাক্ষর করা ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিষয়টি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের অংশ হিসেবে, ওইদিন সুবিধাজনক সময়ে আপনার মসজিদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা, দেশ ও জাতির উন্নতি এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’ পত্রটি মহানগরের সকল মসজিদের ইমামদের কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের ৪টি দপ্তরে।

মঙ্গলবার এ পত্র ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর বিপাকে পড়েন সচিব।

এ বিষয়ে নমিতা দে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভুলবশত পত্রটি তৈরি করা হয়েছিল। তাড়াহুড়ো করে স্বাক্ষর করেছি। পরে ভুল ধরার পর তা সংশোধন করা হয়।’ তার দাবি প্রথম পত্রটি তাকে ব্ল্যাকমেইল করে অন্যান্য ফাইলের সঙ্গে গোলমাল পাকিয়ে গত বছরের কম্পোজ করা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন এক কর্মচারী। এ ভুলের জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। 

সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, অনেক দিন ধরেই নমিতা দে এ সিটি করপোরেশনে কর্মরত রয়েছেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ৫ আগস্টের পর তাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদে পদায়ন করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ