শিরদাঁড়া উঁচু করে চলা তাঁর কাছ থেকে শিখেছি: রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
Published: 25th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ, ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন আর নেই। আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। একক পরিচয়ে সন্জীদা খাতুনের বহুমাত্রিক জীবনের পরিচয় দেওয়া যায় না। তিনি একাধারে ছিলেন শিক্ষক ও গবেষক, শিল্পী ও সংগীতজ্ঞ, দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় অধিকারকর্মী। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের শিল্প–সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। আত্মীয়স্বজনদের পাশাপাশি তাঁর সহযোদ্ধা, সহশিল্পী, শিক্ষার্থী ও গুণমুগ্ধরা শোক প্রকাশ করেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে তাঁকে নিয়ে শোক প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বক্তব্য দেন গুণী রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। তাঁর বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
আমি ১৯৬৭ সালে প্রথম ছায়ানটে ভর্তি হই। তখন সন্জীদা খাতুনকে শিক্ষক হিসেবে পাই। ওই সময় জাহিদুর রহমানও আমাদের ক্লাস নিতেন। আমি তখন স্কুলে পড়ি, ক্লাস ফাইভ না সিক্স সম্ভবত। তখন আজিমপুরের অগ্রণী স্কুলে ছায়ানটের ক্লাস হতো। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৫ সালে আমি চলে যাই শান্তিনিকেতনে। তিনি আমার মায়ের বন্ধু ছিলেন, তাই তাঁকে সব সময় সন্জীদা খালা বলে ডাকতাম।
শান্তিনিকেতনে যাওয়ার আগে তিনি আমাকে ইন্টারভিউ তৈরি করে দিলেন। কী কী গান গাইব, তা ঠিক করে দিলেন। ইন্টারভিউ দিয়ে সুযোগ পেলাম। এরপর শান্তিনিকেতনে গেলাম। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসি। তবে ওখানে থাকার সময়ও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তিনি তখন শান্তিনিকেতনে পোস্টডক্টর ছিলেন। দেশে ফিরে আসার পর দেখা করতে যাই। তখন জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী করবি এখন?’ বললাম, ভাবিনি। বললেন, ‘তাহলে ছায়ানটে চলে আয়।’ এরপর ছায়ানটে এসে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিই। ১৯৮১ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত টানা ১০ বছর ছায়ানটে শিক্ষকতা করি। ১৯৯১ সালে আবার শান্তিনিকেতনে যাই, পড়তে। ফিরে এসে ১৯৯২ সালে সুরের ধারা শুরু করি।
সন্জীদা খাতুন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
দক্ষিণ আমেরিকার নারী ফুটবলে ব্রাজিল নামটা মানেই আতঙ্ক। কোপা আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দলটি এবারও সেই পরিচয় বজায় রেখেছে। মেয়েদের কোপা আমেরিকার দশম আসরের সেমিফাইনালে উরুগুয়েকে ৫-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে আবারও ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে সেলেসাও নারীরা। শুধু তাই নয়, এই জয় তাদের ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের টিকিটও নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ সময় বুধবার অনুষ্ঠিত ম্যাচে মাঠের প্রতিটি বিভাগেই ছিল ব্রাজিলের মেয়েদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য। কোচ রদ্রিগো পাস দেলগাদোর কৌশলে দলটি প্রথমার্ধেই তিন গোল করে উরুগুয়েকে প্রায় ধরাশায়ী করে দেয়। যদিও উরুগুয়ে একটি গোল শোধ দেয় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে, কিন্তু খেলায় ফিরতে পারেনি তারা। বরং নিজেদের একজন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখায় দলটি আরও বিপাকে পড়ে। এর সুযোগ নিয়ে ব্রাজিল আরও দুই গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে ছিল ব্রাজিল। ১১তম মিনিটে মার্তার দুর্দান্ত ক্রস থেকে আমান্দা গুতিয়েরেসের হেডে আসে প্রথম গোল। দুই মিনিটের মাথায় গিও গারবেলিনির গোলের মাধ্যমে ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। এরপর ২৬ মিনিটে মার্তা পেনাল্টি থেকে তৃতীয় গোল করেন। বিরতিতে যাওয়ার আগেই ম্যাচ কার্যত নিশ্চিত করে ফেলে ব্রাজিল।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে ভারত-চীন-ব্রাজিলকে হুঁশিয়ারি ন্যাটোর
ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা মন্থর ব্রাজিলের ছন্দে সুযোগ নিয়ে উরুগুয়ে একটি গোল শোধ দেয়। কিন্তু ৬৫ মিনিটে আমান্দা ফ্রি-কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের চতুর্থ গোল করেন। এরপর ৮৬ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় দুদিনিয়ার অসাধারণ শটে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-১। উরুগুয়ের গোলরক্ষক সেই শট ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি।
উল্লেখ্য, কোপার অন্য সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে কলম্বিয়া। ফলে আগামী শনিবার রাতে (২ আগস্ট) ফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল ও কলম্বিয়া। দুই দলই এখন পর্যন্ত অপরাজিত। গ্রুপ পর্বে তাদের মধ্যে হওয়া ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল, ফলে ফাইনাল হতে যাচ্ছে এক রোমাঞ্চকর লড়াই।
ব্রাজিল যেখানে পাঁচ ম্যাচে চারটি জয় ও একটি ড্র নিয়ে এগিয়ে, সেখানে কলম্বিয়া তিনটি ম্যাচ জিতেছে ও দুটি ড্র করেছে। দুই দলের আক্রমণভাগ, রক্ষণ, এবং মিডফিল্ড; সব বিভাগেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করা যাচ্ছে।
ঢাকা/আমিনুল