শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বসতবাড়িতে ঢুকে মুক্তা বেগম (৫৫) নামে এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের বারৈজঙ্গল গ্রামে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আহমেদ জানান, নিহত মুক্তা বেগম ওই এলাকার মান্নান গাজীর স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছে, নিহতের রক্তাক্ত নিথর দেহ নিজ ঘরের খাটের ওপর পড়ে ছিল। তবে মাথা খাটের নিচে ঝুলছিল। গলার পেছনে ও সামনে ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে ভয়ঙ্কর আঘাত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গলার রগ কেটে যাওয়ায় তিনি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।’

ওসি আরও বলেন, ‘ঘটনার সময় নিহতের স্বামী তারাবির নামাজের জন্য মসজিদে গিয়েছিলেন। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, ডাকাতির সময় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি এটি ডাকাতির উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছে, নাকি অন্য কোনো কারণ জড়িত রয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং আশা করছি, খুব শিগগিরই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো.

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ঘটনাস্থলে ভেদরগঞ্জ থানার ওসিকে পাঠানো হয়ছিল। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা ও হত্যার মূল কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হবে। আমরা দোষীদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাঁকো বিড়ম্বনার ৪০ বছর 
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা