সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে বরিবার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়েছে। তারা সৌদির আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা পালন শেষে ঈদ উদযাপন করছেন।

ঈদ উদযাপনে তারা সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মোনাজতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি এবং দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। পরে সেমাইসহ মিষ্টিমুখ করে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

ফেনী 
ফেনী জেলার তিনটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুরের দুটি পাড়া ও পরশুরাম পৌরসভার কোলাপাড়া এলাকায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

এক টাকায় ১৮ পণ্যের ঈদ উপহার 

১০ টাকার ঈদবাজারে ৪০০ পরিবারের মুখে হাসি

পূর্ব সুলতানপুরের শাহ আমানিয়া জাহাগিরিয়া দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম নবীর ইমামতিতে ঈদের নামাজ আদায় করেন। একই সময় গ্রামের অপর একটি অংশ পূর্ব সুলতানপুর রশিদিয়া দরবার শরীফের মরহুম মাওলানা গোলাম কিবরিয়া পীরমিয়ার ছেলে মুহাম্মদ সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, দুইশত বছরের বেশি সময় ধরে তারা সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছেন।

পূর্ব সুলতানপুর শাহ আমানিয়া জাহাগিরিয়া দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম নবী বলেন, সকাল থেকে মুসল্লিরা উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদগাহে আসতে শুরু করে। সুশৃঙ্খলভাবে নামাজ শেষ হয়েছে।

এ দিন পরশুরাম উপজেলার পৌর এলাকার কোলাপাড়া ছয়ঘরিয়া এলাকায় একটি স্থানেও ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

গাজীপুর
গাজীপুরের সদর উপজেলার ডগরি এলাকায় একটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৭টার দিকে এই নামাজ হয়। যেখানে কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা নামাজে অংশ নেয়।

নামাজ শেষে মোনাজতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। এ সময় অনেক মুসল্লিকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। নামাজ শেষে পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং মিষ্টিমুখ করেন।

নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রোজার পর এই দিনে তারা আনন্দে মেতে ওঠে। 

মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জের দুই উপজেলার ১৫টি গ্রামে ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে ওই সব এলাকায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা সদরের শিলই ইউনিয়নের উত্তরকান্দি মাঝিবাড়ি ঈদগাহে জাহাগিরিয়া মাঠে সকাল ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেয়।

জাহাগিরিয়া তরিকার অনুসারীদের মতে, পৃথিবীর যে কোনো স্থানে চাঁদ দেখা গেলে ঈদ উদযাপন করা উচিত। তাই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা ঈদ উদযাপন করেন।

শিলই ইউনিয়ন পরিষদ ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য দিল মোহাম্মদ বেপারী বলেন, তাদের ইউনিয়নের জাহাগিরিয়া তরিকার লোকজন ঈদের জামাত পড়েছে।  

বগুড়া
বগুড়ার তিন উপজেলার কিছু এলাকায় ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। ধুনট উপজেলার হাশুখালী গ্রামে, সোনাতলা উপজেলার কালাইগাটা গ্রামে এবং গাবতলী উপজেলার রেল স্টেশন এলাকা ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।

ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার দুটি গ্রামের কয়েক বাড়ির মুসল্লিরা সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের নামাজ আদায় করেন। আর গাবতলী উপজেলার রেল স্টেশনের একটি মাঠে সকাল ৮টায় ঈদের অর্ধশত মুসল্লি জামাতের আয়োজন করেন। নামাজ শেষে তারা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।

ঝিনাইদহ 
ঝিনাইদহের কয়েকটি গ্রামের মুসল্লিরা ঈদ উদযাপন করেন। সকাল ৮টায় সদর উপজেলা শহরের ফুটবল মাঠ এলাকায় এ ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা রেজাউল ইসলাম।

মুসল্লিরা জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চোরকোল, শ্যামনগর, যাদবপুর; হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর, নারায়নকান্দি, বৈঠাপাড়া, বোয়ালিয়া, চটকাবাড়ীয়া, পারফলসী, পায়রাডাঙ্গা এবং শৈলকুপা উপজেলার ভাটইসহ জেলাশহর থেকে আগত মুসল্লিরা এ ঈদের নামাজ আদায় করেন।

নামাজ শেষে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

দিনাজপুর
দিনাজপুরে ৬ উপজেলার কিছু সংখ্যক গ্রামের বাসিন্দাদের একটি অংশ ঈদ উদযাপন করছেন।

দিনাজপুর শহরের বাসুনিয়া পট্টি পার্টি সেন্টারে; চিরিরবন্দর উপজেলার রাবার ড্যাম এলাকায়; বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়রা গ্রামের নুরুলহুদা মাদ্রাসা মাঠে, ৬ জোদবানি ইউনিয়নের খয়েরবাড়ী আমগাছি ঈদগা মাঠে; নবাবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের রাঘবেন্দপুর বাজার মাদ্রাসা মাঠে; কাহারোল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গোরস্থান ঈদগাঁ মাঠে; বিরল থানাধীন ধর্মপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে বনগাঁও জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন কয়েক শতাধিক পরিবার। 

সকাল ৯টায় দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় সাইতাঁড়া ইউনিয়নের রাবারড্যাম চিরিনদী ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন আশপাশের কয়েকটি পরিবারের মানুষ। এই জামাতে পুরুষ, মহিলা ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক মুসল্লি অংশ নেয়। জামায়াতে ইমামতি করেন মোহাম্মদ আব্দুল আলীম।

চিরিনদী ঈদগাহ মাঠের সভাপতি হাসান আলী জানান, তারা ২০০৯ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করেন।

বাগেরহাট
বাগেরহাটের মোংলায় শতাধিক পরিবার ঈদ উদযাপন করছেন। উপজেলার চটের হাট এলাকার ১০০টি পরিবার সকাল ৮টায় চটের হাট জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন। জামাতে নারী-পুরুষ অংশ নেয়। নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। 

তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে মিষ্টি ও সেমাই খেয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।

চটের হাট জামে মসজিদের সভাপতি ইয়াসিন শেখ বলেন, ‘‘যারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেননি, তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। আমরা সব মুসলমানের ঐক্য কামনা করি। এ কারণে চটের হাট জামে মসজিদে পরপর দুই দিন ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। যারা আজ ঈদ করছেন, তারা আজ নামাজ পড়েছেন। আর যারা সোমবার বা মঙ্গলবার ঈদ উদযাপন করবেন, তাদের জন্য আলাদা ইমামের নেতৃত্বে জামাতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’’

ফরিদপুর
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১৩টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ঈদ উদযাপন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের সহস্রাইল, দড়ি সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, বারাংকুলা, বড়গাঁ, মাইটকুমড়া, গঙ্গানন্দপুর, রাখালতলী, কাটাগড়, কলিমাঝি, বন্ডপাশা, জয়দেবপুর ও দিঘীরপাড় গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ঈদ উদযাপন করছেন। 

সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। মাইটকুমরা জামে মসজিদের ইমাম মো.

রিফাত শিকদার জানান, তার মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইভাবে সহস্রাইল দায়রা ঘর জামে মসজিদে সকাল ১০টায় নামাজ আদায় করা হয়।

এই ১৩টি গ্রামের সবাই একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন না। বেশিরভাগ মানুষ বাংলাদেশে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ উদযাপন করবেন। মাইটকুমরা গ্রামের আবুল হাসান শেখ বলেন, তাদের গ্রামের কিছু মানুষ আজ ঈদ পালন করছেন। বাকিরা আগামীকাল করবেন।

শেখর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ জানান, এখানকার কিছু মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেন। এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের অংশ। 

ঢাকা/সাহাব/রেজাউল/তামিম/মোসলেম/শহীদুল/এনাম/সোহাগ/রতন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ উৎসব র ন ম জ অন ষ ঠ ত সদর উপজ ল উপজ ল র র র উপজ ল র ম হ ম মদ পর ব র য় ঈদ র এল ক য় ন কর ন ঈদগ হ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক

নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।

ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’

সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।

প্রতিবাদ, বিক্ষোভ

সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।

‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।

দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।

সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।

সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।

কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ