ঈদুল ফিতরের দিন ও পরের দিন আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) কুষ্টিয়ার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় রয়েছে। রঙ-বেরঙের পোশাক পরে তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষ এখানে ছুটে আসছে।

ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বাড়ি ফেরা মানুষও পরিবার নিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে এসেছে।

ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে ভিড় কিছুটা কম থাকলেও বেলা গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। কুষ্টিয়া শহরের রেনউইক বাঁধ, রবীন্দ্র-লালন উদ্যান, কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া শিশুপার্ক, হাউজিং মাঠ, ভেড়ামারা মনি পার্কসহ বেশ কিছু খেলার মাঠে শিশুমেলায় মানুষের ভিড় লেগে আছে।

আরো পড়ুন:

১৬ বছর পর মুক্ত পরিবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঈদ

ঈদের নামাজে মাইকের শব্দ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১২

মিরপুর উপজেলার আমলাসদরপুর এলাকা থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া শিশু পার্কে এসেছে শিশু মনিকা খাতুন। সে পার্ক ঘুরে ঘুরে বেশকিছু রাইড উপভোগ করেছে। সন্তানকে নিয়ে বিকেল থেকে ঘুরছেন বলে জানান বাবা রবিউল ইসলাম। 

মনিকা খাতুন বলে, ‘‘বাবাকে অনেক দিন ধরে বলছিলাম। তাই তিনি ঈদের পর আমাদের ঘুরতে এনেছেন। এখানে ঘুরে মজা পেয়েছি, আমি খুব খুশি।’’

শুধু ছোটরা নয়, পার্কে এসেছে বিভিন্ন বয়সী দম্পতি। তারা আনন্দের মুহূর্তটা ক্যামেরাবন্দি করতেও ভুলছে না।

হাউজিং খেলার মাঠের পাশে অস্থায়ী বিনোদন কেন্দ্র বসেছে। পাশাপাশি মেলাও বসেছে। অনেকে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে হেঁটে বেড়াচ্ছে। বাচ্চারা দল বেঁধে নাগরদোলা, চরকি, নৌকার দোলনায় চড়ে আনন্দ উপভোগ করছে।

বাবা ও মায়ের সঙ্গে বেড়াতে এসেছে রোজা, নিমু ও তাবিয়া। তারা জানায়, ঈদের নামাজের পর বাসায় সেমাই খেয়ে তারা গ্রামের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে ঘুরে এসে বিকেলে পার্কে এসেছে। অনেক মজা করছে তারা।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীয়া শিশুপার্কে মানুষের ভিড়। টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে ৩০ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাইডে চড়ার সুযোগ আছে। তবে টিকিট কাটতে গিয়ে লম্বা লাইন। আর রাইডের কাছে গিয়েও দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

সেখানে পরিবার নিয়ে ঘুরছেন মো.

আক্তার হোসেন। তিনি জানান, এমনিতে বাচ্চাদের নিয়ে বের হওয়ার সময় পাননি। তাই আজ ঘুরতে বের হয়েছেন। স্ত্রী ও মেয়েসহ সবাই বেশ কয়েকটি রাইডে উঠেছে। এতে তারা খুব খুশি। বিশেষ করে বাচ্চারা খুব উপভোগ করেছে।

শহীদ জিয়াউর রহমান শিশুপার্কে তেমন উন্নয়ন না থাকায় অভিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে এসে বিমুখ হয়ে ফিরে গেছে। 

ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল হক বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান শিশুপার্ক এক সময় অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত ছিল। অনেকে সময় কাটাতে, কখনো বা পরিবার-পরিজন নিয়ে এই পার্কে আসতেন। তবে এখন এখানে তেমন কিছু না থাকায় দর্শনার্থীরা আসতেই চায় না।
 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ উৎসব ল ইসল ম আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ