রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীন ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ক্রেমলিনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠককালে এ আহ্বান জানান তিনি। 

বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়া-চীন সম্পর্ক বিকশিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা গভীরতর হচ্ছে। 

‘রাশিয়া-চীন সংস্কৃতি বর্ষ’ কর্মসূচি দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
পুতিন উল্লেখ করেন, এ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে চীনের প্রতিনিধিদের রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় স্মরণসভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। 

তিনি বলেন, নাৎসি ও জাপানি সামরিকবাদের বিরুদ্ধে বিজয় উদযাপন দুই দেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

ওয়াং ই চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের উষ্ণ শুভেচ্ছা পুতিনের কাছে পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরো গভীর হচ্ছে। রাশিয়া ও চীনের সহযোগিতা কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয় এবং এটি বহিরাগত হস্তক্ষেপের ঊর্ধ্বে থাকবে।

ওয়াং ই আরো বলেন, উভয় দেশ একসঙ্গে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার এবং জাতিসংঘের ভূমিকা শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবে।

ঢাকা/হাসান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না

বিশ্বরাজনীতিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি একটি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ইস্যু। পশ্চিমা শক্তিগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান নাকি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আজ পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি, যা এ দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে। অন্যদিকে ইরান শুরু থেকেই বলে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

প্রশ্ন হলো, যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইত, তাহলে গত দুই দশকে তা তৈরি করেনি কেন? আর যদি তা না-ই চায়, তাহলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে ইরানের ধর্মীয় অবস্থান, কৌশলগত চিন্তা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির দ্বিচারিতা একত্রে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আরও পড়ুনইরান এবার বড় যুদ্ধের জন্য যেভাবে প্রস্তুত হবে০৬ জুলাই ২০২৫ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ও নৈতিক অবস্থান

২০০৩ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি ঐতিহাসিক ফতোয়া জারি করেন। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, মজুত কিংবা ব্যবহার ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।’ এ সিদ্ধান্ত শুধুই ধর্মীয় নয়, বরং একটি নৈতিক অবস্থানও, যেখানে নিরীহ মানুষ হত্যাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। পারমাণবিক বোমা শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে না, বরং শহর, জনপদ ও লাখ লাখ নিরীহ মানুষের প্রাণ হরণ করে। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

ইরান মনে করে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার শুধু মানবতার বিরুদ্ধে নয়, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিরুদ্ধে চরম অন্যায়। হিরোশিমা-নাগাসাকির দৃষ্টান্ত এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ দেয়।

কৌশলগত ও সামরিক বাস্তবতা

অনেকের ধারণা, পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেই একটি দেশ নিরাপদ থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলেও ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানে অংশ নিতে বাধ্য হয়। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে। এমনকি রাশিয়া, যাদের বিশ্বের সর্বোচ্চ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সঙ্গে কৌশলগতভাবে চাপে পড়েছে। ইসরায়েলও অঘোষিত পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’-এ বড় ধরনের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।

এ বাস্তবতা ইরানকে বুঝিয়ে দিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র নয়, কার্যকর প্রতিরোধক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। তাই তারা শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন এবং কৌশলগত অস্ত্র নির্মাণে জোর দিয়েছে।

সামরিক মহড়া চলাকালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের অজ্ঞাত স্থান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ছবিটি প্রকাশ করে ইরান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাল্টা শুল্ক কমিয়ে আনা আশাব্যঞ্জক, তবে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই
  • কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশে জোর সেনাপ্রধানের
  • ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না