চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া যেন এক মৃত্যুকূপ। প্রতিদিন ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। শুধু ঈদের তিন দিনেই মারা গেছেন অন্তত ১৫ যাত্রী। এটি সড়ক দুর্ঘটনার হটস্পট হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়রা জাঙ্গালিয়াকে মরণফাঁদ হিসেবে জানেন।
ছয় কারণে চুনতির জাঙ্গালিয়ায় ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, দুই পাশে ঘন বনাঞ্চল, লবণবাহী ট্রাক থেকে নিঃসৃত পানি, অপ্রশস্ত সড়ক, জাঙ্গালিয়ার সড়ক ঢালু এবং দূরপাল্লার গাড়িচালকদের অভিজ্ঞতা নেই এ সড়কে চলাচলে। মূলত এই ছয় কারণে জাঙ্গালিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।
চুনতি জাঙ্গালিয়ার একই স্থানে একই সময় ঈদের দিন দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। পরদিন একই স্থানে দুই মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে আটজন আহত হন। গতকাল যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত হন আরও ১০ জন।
দোহাজারী হাইওয়ে থানা পুলিশ ও নিরাপদ সড়ক চাই-লোহাগাড়ার অফিস সূত্রে জানা যায়, গেল ছয় মাসে জাঙ্গালিয়ায় ৬৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহত হয়েছেন ২৯ জন। আহত অর্ধশতাধিক।
কেন এত দুর্ঘটনা
লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র, যিনি তিনটি উদ্ধার অভিযানেই অংশ নিয়েছেন। তিনি জানান, লবণ পরিবহনকারী ট্রাক থেকে পড়া পানিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া একটি বড় কারণ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরীও তাঁর কথার প্রতিধ্বনি করে বলেন, লবণ পানির পাশাপাশি সকালে কুয়াশার কারণেও সড়ক ভেজা ও পিচ্ছিল থাকতে পারে।
এ ছাড়া সড়কের দুই পাশ অসমান এবং মাটির গাড়ি থেকে মাটি পড়ে পানি ও কুয়াশায় পিচ্ছিল হয়, বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং, অপ্রশিক্ষিত চালক, গাড়ির এলইডি হেডলাইটের আলো, মহাসড়কে নিষিদ্ধ ছোট যানবাহন চলাচল, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চলাচল, অবৈধ বিলবোর্ড স্থাপনের কারণেও সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি।
নিরাপদ সড়ক চাই-লোহাগাড়া শাখার সদস্য সোহাগ মিয়া বলেন, লবণবাহী গাড়ি থেকে নিঃসৃত পানির কারণে ওই স্থানে সড়ক সব সময় পিচ্ছিল থাকে। বিশেষ করে দূরদূরান্ত থেকে আসা চালকদের এ সড়কের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা না থাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ ছাড়া দুর্ঘটনাপ্রবণ জাঙ্গালিয়া এলাকায় দেখা যায়নি কোনো সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো.
শুরু হয়নি বাইপাস ও ফ্লাইওভারের কাজ
জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ছয় লেনের চারটি বাইপাস ও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছিল ২০২৩ সালে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তা আলোর মুখ দেখেনি। এর আগে বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ দলও এই মহাসড়কটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে ছয় লেনে উন্নীত করার সম্ভাব্যতা যাচাই করে একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। সেই প্রতিবেদনে বিপজ্জনক বাঁক কমানোর সুপারিশ ছিল। কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি সেটিও। অথচ গত এক বছরে এই মহাসড়কেই প্রাণ ঝরেছে অর্ধশত মানুষের। কক্সবাজারে থাকা পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে যেতে হয় এই মহাসড়ক ধরে। মহেশখালীতে চলমান ৭২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞও চলছে এই মহাসড়ক ঘিরে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম গতকাল বুধবার বলেছেন, শিগগিরই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে সড়কের উভয় দিকে এক কিলোমিটারের মধ্যে গতিরোধক স্থাপনের কাজ শুরু হবে।
থমকে আছে উদ্যোগ
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট শীর্ষক এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা ৫ হাজার ৭০৯ কোটি ও বাংলাদেশ সরকারের ২ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা প্রদান করার কথা ছিল।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শ্যামল ভট্টাচার্য বলেন, ২০২৩ সালে একনেকে পাস হলেও এ প্রকল্পের মূল কাজ কবে শুরু হবে, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে ইতোমধ্যে জাইকার প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট মূল্যায়ন ও পরামর্শ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কনসালট্যান্ট নিয়োগের আগে আরও কিছু ধাপ শেষ করতে হবে। কনসালট্যান্ট নিয়োগ হলেও টেন্ডার দিয়ে কাজ শুরু করতে এ বছর শেষ হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। অবশ্য মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকার দিলে আমরা কাজ এ বছরই শুরু করতে পারব।
তিনি জানান, জাইকার অর্থায়নে মহাসড়কের পটিয়া, চানখালী, কক্সবাজারের মাতামুহুরী, চন্দনাইশের শঙ্খ ও বরুমতী খালের ওপর ৭৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি অত্যাধুনিক পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হলে সুফল পেত মানুষ।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা জানান, মহাসড়কের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ২৫ দশমিক ২৭ কিলোমিটার অংশে চারটি বাইপাস ও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করার কথা ছিল। পটিয়া, দোহাজারী, চকরিয়া ও আমিরাবাদে একটি করে বাইপাস এবং সাতকানিয়ার কেরানীহাটে একটি ফ্লাইওভার নির্মিত হওয়ার কথা। এগুলো নির্মিত হলে বাঁকের সংখ্যা যেমন কমত, তেমনি কমত যানজট ও দুর্ঘটনাও।
এই পাঁচটি বাইপাসের বাইরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাড়কের অবশিষ্ট অংশ ১০৭ কিলোমিটার সড়কও জাইকার অর্থায়নে হওয়ার কথা ছিল। এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বলার মতো অগ্রগতি নেই। জাইকা প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রামের মইজ্যারটেক থেকে চকরিয়া পর্যন্ত অংশে তা করতে চেয়েছিল।
মহাসড়কে শতাধিক বিপজ্জনক বাঁক
অনেক আগে থেকেই বিপজ্জনক চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। ১৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি দখলদারদের কবলে পড়ে শুধু সরুই নয়, বেশ আঁকাবাঁকা ও বেহাল। অনেক স্থানে দখল হয়ে যাচ্ছে মূল সড়কও। বিভিন্ন স্থানে উঠে গেছে পাথরের কার্পেটিং। চট্টগ্রাম থেকে তিন ঘণ্টায় কক্সবাজারে আসা-যাওয়ার কথা থাকলেও লেগে যাচ্ছে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। ঘটছে দুর্ঘটনাও। মহাসড়কটির জন্য স্থানভেদে ৬০ থেকে ১০৪ ফুট পর্যন্ত জায়গা অধিগ্রহণ করা থাকলেও দুই লেনের মূল সড়কটি ২৪ ফুটের। সড়কের দু’পাশে অবশিষ্ট সব জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। এরই মধ্যে মহাসড়কের কক্সবাজারের চকরিয়া অংশে আজিজনগর থেকে ডুলাহাজারা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়কে ৫৯৩টি অবৈধ স্থাপনা অনেক আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু উচ্ছেদ হয়নি সেসব।
এই মহাসড়কে শতাধিক বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘মৃত্যুফাঁদ’ হয়ে থাকা বাঁকগুলো এতই বাঁকানো যে, একদিক থেকে গাড়ি এলে অন্যদিক থেকে দেখা যায় না। একটু অসতর্ক হলেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। এ ধরনের দুর্ঘটনায় গত এক বছরে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। অথচ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দেশি-বিদেশি পর্যটক ছাড়াও প্রতিদিন অর্ধ লাখ মানুষ এই মহাসড়কে চলাচল করেন।
বিভিন্ন সময় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সোজা করার কথা বলা হলেও তা হয়নি। পটিয়ার ইন্দ্রপোল থেকে চক্রশালা পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ ও বাঁক সরলীকরণে ২০১২ সালে ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হলেও ভূমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পটি পরে আর বাস্তবায়ন করা যায়নি। বিশ্বব্যাংক অর্থ সহায়তা দিলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরে তা ফেরত নিয়ে যায়। এর পর অবশ্য নতুন প্রকল্প নিয়েছিল সড়ক বিভাগ। ৭৪ কোটি টাকায় ইন্দ্রপোল থেকে চক্রশালা পর্যন্ত ১ দশমিক ১ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এটির আওতায় কিছু বাঁক সোজা করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও শতাধিক বাঁক আছে বিপজ্জনক অবস্থায়।
সরেজমিন দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাচুরিয়া, মনসারটেক, গৈড়লারটেক, আমজুর হাট, পটিয়া পোস্ট অফিস মোড়, থানা মোড়, চক্রশালা, জলুয়ার দীঘি, খরনা মোড়, পশ্চিম পটিয়ার মইজ্যারটেক, আনোয়ারা ক্রসিং, শিকলবাহা, বোয়ালখালীর আপেল ড্রাইভারেরটেক, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় মোড়, রওশন হাট, পদুয়া, বারআউলিয়া, রাজঘাটা, আমিরাবাদ পুরাতন থানা, আধুনগর, রামু, চৌমুহনী, রাবার বাগান মোড়, খুটাখালী কিশলয় পয়েন্ট, ডুলাহাজারা বাজার পয়েন্ট, চুনতী বাজার, হাজি রাস্তার মাথা, ফরেস্ট গেট, জাঙ্গাইল্যার ঢালা, চকরিয়া কলেজ মোড়, হারবাং নতুন রাস্তার মোড়, গাছবাড়িয়া পায়রারটেক, বাগিচাহাট মোড়, ভাণ্ডারীপাড়া মোড়, কসাইপাড়া, সোনার বটতল, দেওয়ানহাট, দোহাজারী স্কুল, বিওসি মোড়, সাতকানিয়া রাস্তার মাথা, মিঠাদীঘি, চারা বটতল, ঠাকুরদীঘি, বরইতলী মাদ্রাসা মোড়, গয়ালমারা ও ফাসিয়াখালী এলাকায় রয়েছে বিপজ্জনক বাঁক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত ফ ল ইওভ র দ র ঘটন প রকল প চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।
শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।
ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ