Prothomalo:
2025-08-01@22:08:00 GMT

ঈদে ইউটিউবে কী দেখছেন দর্শক

Published: 3rd, April 2025 GMT

চলতি ঈদে বড় পর্দা নিয়ে যতটা আলোচনা হচ্ছে, সে তুলনায় পিছিয়ে আছে ছোট পর্দা। অন্য সময়ের তুলনায় এবার টেলিভিশন ও ইউটিউবে নাটকের সংখ্যাও অনেক কম। তবে ইউটিউবের কয়েকটি কনটেন্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দর্শকের মধ্যে। ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের সেরা দশে একটি ইউটিউব ফিল্ম, একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানসহ দুটি নাটক জায়গা পেয়েছে।

ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে মোস্তফা কামাল রাজের ইউটিউব ফিল্ম ‘তোমাদের গল্প’। এটি মুক্তি পেয়েছে সিনেমাওয়ালার ইউটিউব চ্যানেলে। বৃহস্পতিবার রাত আটটা পর্যন্ত এর ইউটিউব ভিউ ৪২ লাখ ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। এতে পাঁচ প্রজন্মের পাঁচ অভিনেত্রী তানজিম সাইয়ারা তটিনী, দিলারা জামান, সাবেরি আলম, মনিরা আক্তার মিঠু ও শিল্পী সরকার অপুকে দেখা গেছে। আরও অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান, নাদের চৌধুরী, বড়দা মিঠু, এম এন ইউ রাজু, সমু চৌধুরী ও শিশুশিল্পী আয়াত।

ঈদে শহরবাসী গ্রামে পরিবারের কাছে যায়। সেই পটভূমিকে অবলম্বন করে একটি পরিবারের গল্প নিয়ে ইউটিউব ফিল্মটি তৈরি হয়েছে। এর চিত্রনাট্য লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ।

ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের পাঁচে আছে নির্মাতা হাসিব হোসাইনের ‘মন দিওয়ানা’। সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে নাটকটি। নাটকটির প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও তটিনী। বৃহস্পতিবার রাত আটটা পর্যন্ত এর ইউটিউব ভিউ ৩৪ লাখ ২২ হাজার ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুনট্রেন্ডিংয়ে নতুন কোন নাটক, কী বলছেন দর্শকেরা০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নির্মাতার ভাষ্যে ‘গল্পটা শুধু প্রেমের নয়, বন্ধুত্বেরও। যেখানে প্রেম ও বন্ধুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে সমান্তরাল গতিতে, যা দেখে দর্শকেরা ভিন্নতার স্বাদ পাবেন।’

ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে ছয়ে আছে হানিফ সংকেতের রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের বিশেষ ইত্যাদি বিটিভিতে প্রচারিত হয় ঈদের পরদিন রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর। ফাগুন অডিও ভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ইত্যাদির ভিউ ছাড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৪০ হাজার।

ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে দশম স্থানে আছে মহিন খানের পরিচালনায় নাটক ‘টেলিফোনে বিয়ে’। নাটকটি মুক্তি পেয়েছে নাফ এন্টারটেইনমেন্ট ইউটিউব চ্যানেলে। বৃহস্পতিবার রাত আটটা পর্যন্ত এর ইউটিউব ভিউ ৯৭ লাখ ছাড়িয়েছে। নাটকটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিলয় আলমগীর ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ত আটট ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ

আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।

নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।

আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরি

মিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।

এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।

আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩

বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।

বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?

মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবন

মহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।

এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।

ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।

দানের সংস্কৃতি

আজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫

কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।

ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।

যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪

বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।

আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।

ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।

আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।

আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ