বিশ্বকাপ এলেই ফুটবল নিয়ে দেশের মানুষের উন্মাদনা চোখে পড়ে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে ঘিরে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অথচ সেই তুলনায় দেশের ফুটবলের প্রতি আগ্রহ বরাবরই কম। তবে সময় বদলাচ্ছে, আর বদলের অন্যতম নাম হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের এই মিডফিল্ডারের আগমনে বাংলাদেশের ফুটবলে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরেছে।
সম্প্রতি ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বড় ভূমিকা রেখেছেন হামজা। ভারতকে রুখে দিয়ে এশিয়া কাপের যোগ্যতা অর্জনের পথে এগিয়ে গেছে লাল-সবুজের দল। আর অভিষেক ম্যাচেই নজর কাড়েন হামজা, যিনি ইংল্যান্ডে বেড়ে ওঠা হলেও রক্তে টান অনুভব করেছেন বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের হয়ে খেলা শুরুর এক মাসও হয়নি, এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। ফেসবুকে হামজার অনুসারীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ লাখ, এক মিলিয়ন! এই ভালোবাসায় মুগ্ধ হামজা নিজেই। ফেসবুকে ভক্তদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, 'এক মিলিয়ন ফলোয়ার! আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের সমর্থনের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।'
২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ চালু করেন হামজা। শুরুতে খুব বেশি সক্রিয় না থাকলেও, বাংলাদেশে আসার পর পোস্ট করেছেন শৈশবের কিছু ছবি ও ভিডিও। ভক্তদের ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে এগিয়ে চলা এই মিডফিল্ডার এখন শুধু মাঠেই নয়, ভক্তদের মনেও স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।