ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 6th, April 2025 GMT
অতিদ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৬ এপ্রিল) উপাচার্য কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদের কাছে শিক্ষার্থীরা এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, অভ্যুত্থানের প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও আমাদের প্রাণের দাবি ডাকসু নির্বাচনের কোনো রূপরেখা আমরা আজো পাইনি। ডাকসুর রূপরেখার দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছি। অতান্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের ভয়াবহ গড়িমসি আমরা লক্ষ্য করছি।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে বর্ণাঢ্য ঈদ শোভাযাত্রা
৪৭ ও ৭১-কে পূর্ণতা দিয়েছে ২৪: বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ
তারা বলেন, গত জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে ডাকসুর দাবিতে আমরা অনেকদিন ধারাবাহিক আন্দোলন করেছি। জানুয়ারির মাঝামাঝিতে আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য বলেছিলেন কয়েকদিনের মধ্যে ইনস্টিটিউশনাল ই-মেইলের মাধ্যমে ডাকসুর গঠনতন্ত্র এবং ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করবেন। কিন্তু সেটি গ্রহণ করতে প্রশাসনের ২ মাসের বেশি সময় লেগেছে। মার্চের শেষে এসে এ মতামত গ্রহণ করা হয়।
তারা আরো বলেন, আমরা গত আগস্টে শুনেছিলাম, ৩-৪ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা হবে। অথচ ৮ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এখনো ডাকসু নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপই আমরা পাইনি। যেখানে রাবি এবং জাবিতে ইতোমধ্যেই তাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে।
ডাকসুর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তারা বলেন, বাংলাদেশের এ স্বাধীনতাকে চিরস্থায়ী করতে, পতিত স্বৈরাচারের উত্থান রুখে দিতে, নব্য স্বৈরাচার প্রতিরোধ, দেশের মানুষের গণ অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্থায়ীভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সম্মত ক্যাম্পাস বিনির্মাণ এবং লেজুরবৃত্তিক ভয়াবহ দলীয় ছাত্র রাজনীতির কড়াল গ্রাস থেকে ক্যাম্পাস নিরাপদ রাখতে ডাকসুর বিকল্প নেই।
আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়ে তারা বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা ডাকসু নির্বাচনের রূপরেখা চাই। আমরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কখনো স্মারকলিপি, কখনো বিক্ষোভ মিছিল, কখনো প্রশাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি করেছিলাম। আজও সেই নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই স্মারকলিপি নিয়ে এসেছি।
আমাদের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির চর্চাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে কালবিলম্ব না করে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন। আমরা আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত, জুলাই অভ্যুত্থানে এত রক্ত ঝরার পরও কোনো যৌক্তিক দাবি আদায়ে বারবার আন্দোলন করার প্রয়োজন হওয়াটা দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির চর্চার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে ব্যর্থ হয় এবং ডাকসু নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি প্রদান করা অব্যাহত রাখে, তাহলে আমরা ডাকসুর দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প উপ চ র য র পর খ আম দ র র র পর
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’