গাজা ‘পৃথিবীর নরকে’ পরিণত হয়েছে: রেডক্রস
Published: 12th, April 2025 GMT
আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী সংস্থা রেডক্রস জানিয়েছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতি ‘পৃথিবীর নরকে’ পরিণত হয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তারা তাদের অস্থায়ী হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। কারণ এরপর তাদের রসদ ফুরিয়ে যাবে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রেডক্রসের প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজারিক এসব কথা বলেন। খবর রয়টার্সের।
তিনি বলেন, ‘আমরা গাজায় এখন নিজেদের এমন পরিস্থিতিতে দেখছি। যেটিকে আমাকে বলতে হবে পৃথিবীর নরক। মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ, পানি, খাবার পায় না।’
আরো পড়ুন:
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শনিবার
ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিক্ষোভ
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তার আগে, গত ২ মার্চ থেকে গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করেছে ইসরায়েল।
রেডক্রস প্রেসিডন্ট বলেছেন, “গত ছয় সপ্তাহে, কোনো কিছু গাজায় ঢোকেনি। তাই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল চালু রাখতে আমাদের কাছে থাকা যে রসদ আছে সেগুলো ফুরিয়ে যাবে।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রায় ১৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও তিন হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে গাজায় হামলা আরো বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। নিহত ও আহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ বছরে বাড়বে ৬৫ শতাংশ
গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আসল বাবদ সরকার পরিশোধ করেছে ২০২ কোটি মার্কিন ডলার। সরকারের প্রাক্কলন হলো– চলতি অর্থবছরে এ বাবদ ব্যয় হবে ২৬২ কোটি ডলার। পরবর্তী তিন অর্থবছরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ২৯০ কোটি, ৩১৩ কোটি এবং ৩৩৪ কোটি ডলার। সরকারের প্রাক্কলন অনুযায়ী পাঁচ বছরে ঋণের আসল পরিশোধ বাড়বে ৬৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বাজেট দলিল হিসেবে প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে (এমটিএমপিএস) এই প্রাক্কলন রয়েছে।
বিদেশি ঋণের আসলের পাশাপাশি সুদ পরিশোধ করতে হবে। আগামী অর্থবছরে দুটি মিলে ব্যয় হবে ৪৭০ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আগামী ২০২৭-২৮ অর্থবছর এ খাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ৬৮ হাজার ১৮২ কোটি টাকা।
নীতি বিবৃতিতে বলা হয়, মেয়াদপূর্তি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং কিছু ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে আগামী বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার অবমূল্যায়নের ফলে টাকার অঙ্কে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। কেননা একই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ করতে আরও বেশি টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টাকার মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা এ সমস্যা তীব্রতর করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং বর্তমান তারল্য সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য ঋণ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা জরুরি।
এতে আরও বলা হয়, সরকারের সামগ্রিক ঋণ পরিস্থিতি এখনও টেকসই থাকলেও ঋণের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে ক্রমেই বাড়ছে। দেশি-বিদেশি মিলে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষে সার্বিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়াবে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। ২০২৭-২৮ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকা। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে হালনাগাদ তথ্য ব্যবহার করে আরও একটি ‘ডেট সাস্টিনিবিলিটি অ্যানালাইসিস’ বা ডিএসএ প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যা সরকারি অর্থ ব্যবহার ও ঋণের ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঋণের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুদ ব্যয়ের পরিমাণও বাড়বে। চলতি অর্থবছর যেখানে সুদ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৭-২৮ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তিন বছরের ব্যবধানে সরকারের সুদ ব্যয় ৩১ হাজার কোটি টাকা বাড়বে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের ঋণ স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণ অনুযায়ী বাংলাদেশের ঋণ ঝুঁকি এখনও তুলনামূলকভাবে কম। তবে ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ রপ্তানির তুলনায় বাড়তে থাকলে স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। টেকসই পরিস্থিতির জন্য সক্রিয় ঋণ ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।