ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে প্রথম লেগেই নিজেদের কাজটা প্রায় শেষ করে রেখেছে বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ফিরতি লেগটা তাই আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের জন্য সেমিফাইনালে উঠাটা পুতিন-জেলেনস্কির একসাথে বসে কফি খাওয়ার মতোই দূরহ ব্যাপার। বার্সার বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানে জিতলেই ইউলো সামুরাইদের শেষ চারে পদার্পন করা সম্ভব। তবে ডর্টমুন্ড কোচ নিকো কোভাচের বিশ্বাস তাঁর দল মিরাকল ঘটাতে পারবে।

বার্সা প্রথম লেগে রবার্ট লেভানডফস্কির জোড়া গোলের সাথে রাফিনহা ও লামিল ইয়ামালের লক্ষভেদে ডর্টমুন্ডকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে। হানসি ফ্লিকের দলের আক্রমণাত্মক শক্তির সামনে নিকো কোভাচের শিষ্যদের বড্ড অসহায় লেগেছিল। তবে ঘরের মাঠ সিগনাল ইডুনা পার্কে নামার আগে বেশ আত্মবিশ্বাসী শুনাচ্ছে ডর্টমুন্ড ম্যানেজারকে।

আরো পড়ুন:

‘ডার ক্লাসিকেরে’ বায়ার্নকে রুখে দিয়েছে ডর্টমুন্ড

রাতে মুখোমুখি বরুশিয়া-পিএসজি

কোভাচ বলেন, “মিরাকল তো সব সময়ই হয়। আমরা লিভারপুলের সেই ম্যাচটা মনে করতে পারি। ৩-০ গোলে হেরে ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে জিতে ফাইনালে গিয়েছিল দলটা।” কোভাচের কথায় স্পষ্ট, ডর্টমুন্ড ‘লিভারপুল’ হতে চায়। প্রতিপক্ষও সেই বার্সেলোনা।

তবে কোভাচ জানেন, অতীত দিয়ে বর্তমানকে বিচার করা চলে না, “ওটা ছিল তখন, আর এখন ২০২৪-২৫। আমরা জানি, প্রথম লেগে আমরা ভালো খেলিনি। এখন আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।”

সেই কাজটা কঠিন। কারণ বার্সেলোনা ২০২৫ সালে এখনো কোনো ম্যাচ হারেনি। বড়দিনের আগের রাতে সবশেষ হারার পর হানসি ফ্লিকের দল ২৪ ম্যাচে অপরাজিত। কোভাচ জানালেন, “আমরা কালকে ভিন্ন একটা দল হতে চাই, আমরা জিততে চাই। কত গোলে জিতব, সেটা এখন বলা কঠিন।”

বার্সেলোনা এই সপ্তাহে লেগানেসের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে জিতে তারা লা লিগার শীর্ষে অবস্থান করছে। সেমি-ফাইনালে তাদের জায়গা নিশ্চিত হলে তারা বায়ার্ন মিউনিখ অথবা ইন্টার মিলানের মধ্যকার জয়ী দলের মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে ডর্টমুন্ড বার্সেলোনায় হতাশাজনক হারের পর সপ্তাহের শুরুতে ‘ডার ক্লাসিকারে’ বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে। এই ফল সামনের মৌসুমে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফাই করার আশা কিছুটা বাঁচিয়ে রেখেছে।

ডর্টমুন্ড শেষ পাঁচ দেখায় বার্সেলোনার বিপক্ষে জিত তে পারেনি। ইউলো সামুরাইরা ড্র করেছে ২টি ম্যাচ।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ