আরেকটি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাংলাদেশে আসবে না: নাহিদ
Published: 19th, April 2025 GMT
আরেকটি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাংলাদেশে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, এসবের রাস্তা বন্ধ করেই সামনে এগিয়ে যাবে এনসিপি।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য ছিল, আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই। অর্থাৎ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কেবল ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তন করে, রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক এবং গুণগত সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে, এমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।’
এনসিপির আহ্বায়ক আরও জানান, তার দল পরিষ্কারভাবে বলেছে, সংস্কার বলতে তারা মৌলিক সংস্কারকে বোঝেন। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যে সংস্কার করলে রাষ্ট্র কাঠামোর একটি আমূল ও গুণগত পরিবর্তন হবে। বিগত সময়ে আমরা সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ দেখেছি। সংবিধানে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক কাঠামোর বীজ বপন হয়েছিল। ফলে সেই রাষ্ট্র কাঠামোকে অক্ষুণ্ন রেখে যে-ই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাক, তার ভেতরেও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থাকবে, স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকবে।’
রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থাকে জাতীয় নাগরিক পার্টি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যে সুপারিশগুলো পাঠানো হয়েছে, সেগুলোতে আমরা মতামত দিয়েছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি, যেসব জায়গায় আংশিক বা দ্বিমত রয়েছে, সেখানে আমাদের সুপারিশ সংক্ষিপ্ত আকারে দিয়েছি। আজ হয়তো বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ পাব।’
জাতীয় ঐকমত্য ও জুলাই সনদ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, জাতির সামনে আমাদের যে অঙ্গীকার, সেটি পূরণ করতে হবে যে, আরেকটি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাংলাদেশে আসবে না, তার সব রাস্তা বন্ধ করেই সামনে এগোব। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর জন্য যার যার জায়গা থেকে কাজ করব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম এনস প ন হ দ ইসল ম ব যবস থ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।