মাত্র তিন বছর বয়সে সৌদি আরবপ্রবাসী বাবার পাঠানো একটি ক্যামেরার সঙ্গে প্রথম পরিচয় তানজিলের। তখন অন্যের তোলা ছবি শোভা পেত ঘরের দেয়ালে। এখন তাঁর তোলা ছবি শুধুই নিজের নয়, ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষের দেয়ালে, মনের গহীনে। ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মামুনের পুত্র তানজিল ইসলাম মিতুল। জন্মস্থান শরীয়তপুর হলেও শৈশব, কৈশোর ও সৃষ্টিশীলতা গড়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকায়। নগরজীবনের বৈচিত্র্য ও প্রযুক্তির ছোঁয়া তাঁর চিন্তাশক্তিকে শানিত করেছে নতুনভাবে। ড্যাফোডিল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে গ্রাফিক ডিজাইন টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা পড়ার সময় ‘ফটোগ্রাফি অ্যান্ড আর্টস’ কোর্সটি ছিল তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। সেখান থেকে শুরু হয় প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি ও ফিল্ম মেকিং-এর যাত্রা। ২০২১ সালে কভিডের সময় ফিল্ম মেকিংয়ের প্রতি গভীর আকর্ষণ জন্মালেও তখন ছিল না উপযুক্ত ডিভাইস বা সুযোগ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ড্যাফোডিল আয়োজিত ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়ে নিজের প্রথম শর্ট ফিল্ম ‘জড়তা’ নির্মাণ করেন তিনি, যা শতাধিক অংশগ্রহণকারীর মধ্যে বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। শুধু সৃজনশীল কাজ নয়, তানজিল তাঁর প্রতিষ্ঠিত ক্লিক এন ক্রিয়েশন স্টুডিওর মাধ্যমে সমাজ ও দেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ক্লিক এন ক্রিয়েশন স্টুডিও থেকে গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট-এর মতো সেবা প্রদান করছি, যাতে সমাজ এবং অর্থনীতি আরও এগিয়ে যায়। পাশাপাশি বেকার ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের আমরা নামমাত্র মূল্যে এসব বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করার চেষ্টা করছি।’ সামাজিক সংগঠক হিসেবেও সক্রিয় এই তরুণ যুক্ত আছেন ‘লাইভ সার্ভ বাংলাদেশ’, ‘আর্টিস্ট ১০১’সহ দেশি-বিদেশি বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে। u

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ