কিছু নামধারী ছাত্র সমাজকে কলুষিত করতে চায়: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কায়কোবাদ
Published: 19th, April 2025 GMT
কিছু নামধারী ছাত্র সমাজকে কলুষিত করতে চায় এবং যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।
আজ শনিবার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের হায়দারাবাদ সামসুল হক কলেজ মাঠে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির উদ্দেশে শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, তারা যদি সুন্দর নির্বাচন চায়, আমি নিজেই তাদের মঞ্চে জায়গা করে দেব। কিন্তু আজ তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ছাত্ররা আমাদের তাজ, কিন্তু কিছু ছাত্র নামধারী আজ আমাদের সমাজকে কলুষিত করতে চায়।’
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদ আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড.
নিজেকে মুরাদনগরের মানুষের ‘কামলা’ উল্লেখ করে কায়কোবাদ বলেন, ‘আমি আপনাদের কামলা, নেতা নই। ১৯৮৬ সাল থেকে আমি আপনাদের কামলা হিসেবে আছি। আপনাদের ঋণ পরিশোধ করে শেষ করতে পারব না। আপনারা আমাকে পাঁচ-পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আসুন, আমরা সবাই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতায় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের স্বাধীনতায় শহীদদের জন্য সুরা ফাতিহা পাঠ করি। কারণ, তাঁদের জন্য আজ এই খোলা মাঠে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিক আহমেদ মীর, মেজর (অব.) শাজাহান, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন প্রমুখ।
একই সময়ে জনসভা করেছে এনসিপি
বিএনপির জনসভাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলার পীর কাশিমপুর হাইস্কুল মাঠে আজ একই সময় জনসভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা শাখা এনসিপির আয়োজনে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা মো. বিল্লাল হোসেনের (আকবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক)। তবে জনসভার ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত সভায় যোগ দেননি তিনি।
এনসিপির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সমাজসেবক গোলাম কিবরিয়া সরকার। তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত সংস্কার এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার সম্পন্ন করে নির্বাচন দিতে হবে। যেসব দাবিতে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছেন, সেসব দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত এবং মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতে করা ছাড়া কোনো নির্বাচন কাম্য নয়।’
গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন, ‘যারা সংস্কারবিহীন নির্বাচন দাবি করছে, তারা জনগণের কল্যাণ চায় না। একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে চাঁদাবাজি, লুটপাট আর দখলবাজি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অতীতেও দেশের মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছে। আমরা বলতে চাই, দেশের মানুষকে আর কোনো ফ্যাসিবাদের কাছে জিম্মি করা যাবে না। যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে, তাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে হবে। ইতিমধ্যে মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখে বিচলিত হয়ে গেছে। তাই আগামীর প্রত্যাশা পূরণে দেশ ও জাতির কল্যাণে এনসিপির হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’
বাঙ্গরা বাজার থানা এনসিপির সভাপতি কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন এম এ জাহের মুন্সি, মুরাদনগর উপজেলা এনসিপির সভাপতি মো. মিনহাজুল হক, সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক উবাইদুল হক সিদ্দিকী প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র দনগর উপজ ল র উপজ ল ব এনপ র এনস প র জনসভ য় আম দ র ত করত সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
অপকর্মকারীদের দায় দল নেবে না: তমিজ উদ্দিন
ঢাকার ধামরাইয়ে বিএনপির এক জনসভায় দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তমিজ উদ্দিন বলেছেন, ‘‘যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াবে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট করে দিয়েছেন— দল তাদের দায়িত্ব নেবে না।”
রবিবার (১৫ জুন) গাংগুটিয়া ইউনিয়নের নবগ্রাম বাজারে কাওয়ালীপাড়া-নবগ্রাম বাজার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ধামরাই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্ব জনসভায় উপজেলার গাংগুটিয়া, আমতা, বালিয়া, কুশুরা ও সানোড়া ইউনিয়নের বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
এসময় তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘আমাদের সামনে লড়াই এক দিকে নয়। দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সামনে নির্বাচন, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এই সময় আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। কারণ আমরা মোনাফেক, মীরজাফর সবাইকে নিয়ে একত্রে চলছি। আমরা এই চলাটা চাই না। আমরা চাই, দলে প্রতিযোগিতা-প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, সুন্দর থাকবে। সেখান থেকে যোগ্যরা এগিয়ে আসবে, আমরা সবাই তার সঙ্গে থাকব। এখানে ঐক্য ছাড়া বিকল্প কিছু নাই। যারা সন্ত্রাসী করবে, তারেক রহমান পরিষ্কার বলেছেন, তিনি তাদের দায়িত্ব নেবেন না। অর্থাৎ দল তাদের দায়িত্ব নেবে না। অতএব যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে, তাদের বিএনপির বলে চিন্তা করবেন না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বিএনপি করে বিএনপির সুবিধা নিয়ে যারা আওয়ামী লীগের সময় আঁতাত করেছে। এখন বড় নেতা হয়েছে, তাদের বিষয় ঠান্ডা মাথায় খেয়াল রাখতে হবে। যেমনটি তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, সামনে একটা কঠিন নির্বাচন, ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। নির্বাচন দেবে কিন্তু ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। আপনাদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। এখানে আমরা সবাই জানি, ধামরাইয়ে নির্বাচন হলে, মানুষ ভোট দিতে পারলে কি হবে আমরা জানি। আমরা সুন্দর পরিবেশের অপেক্ষায় আছি।’’
সভায় আরও বক্তব্য দেন ধামরাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রাকিবুর রহমান খান ফরহাদ, বালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সহসভাপতি আব্দুল মান্নান মধু, আমতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম লাবু, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এইচ এম লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ধামরাই উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
এছাড়াও উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, যুবদল নেতা মো. খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাব্বির/এস