কিছু নামধারী ছাত্র সমাজকে কলুষিত করতে চায় এবং যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।

আজ শনিবার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের হায়দারাবাদ সামসুল হক কলেজ মাঠে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির উদ্দেশে শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, তারা যদি সুন্দর নির্বাচন চায়, আমি নিজেই তাদের মঞ্চে জায়গা করে দেব। কিন্তু আজ তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ছাত্ররা আমাদের তাজ, কিন্তু কিছু ছাত্র নামধারী আজ আমাদের সমাজকে কলুষিত করতে চায়।’
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদ আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড.

ইউনূস সাহেবকে বলতে চাই, আপনি আমাদের গর্ব, আমাদের কলিজার টুকরা। ছাত্রদের পড়াশোনা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল করবেন। মুরাদনগরবাসী, আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন, দেশে যেন একটি সুন্দর নির্বাচন হয়। কিন্তু যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, আজ তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের অনুসারীরা আমাকে মেরে ব্রিকফিল্ডের আগুনে পোড়াতে চেয়েছিল। আজ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের লোকজনের সঙ্গে তারা জোট বেঁধেছে। মনে রাখবেন যাকে আল্লাহ বাঁচান, তাকে কেউ রুখতে পারে না।’
নিজেকে মুরাদনগরের মানুষের ‘কামলা’ উল্লেখ করে কায়কোবাদ বলেন, ‘আমি আপনাদের কামলা, নেতা নই। ১৯৮৬ সাল থেকে আমি আপনাদের কামলা হিসেবে আছি। আপনাদের ঋণ পরিশোধ করে শেষ করতে পারব না। আপনারা আমাকে পাঁচ-পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আসুন, আমরা সবাই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতায় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের স্বাধীনতায় শহীদদের জন্য সুরা ফাতিহা পাঠ করি। কারণ, তাঁদের জন্য আজ এই খোলা মাঠে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিক আহমেদ মীর, মেজর (অব.) শাজাহান, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন প্রমুখ।

একই সময়ে জনসভা করেছে এনসিপি
বিএনপির জনসভাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলার পীর কাশিমপুর হাইস্কুল মাঠে আজ একই সময় জনসভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা শাখা এনসিপির আয়োজনে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা মো. বিল্লাল হোসেনের (আকবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক)। তবে জনসভার ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত সভায় যোগ দেননি তিনি।
এনসিপির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সমাজসেবক গোলাম কিবরিয়া সরকার। তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত সংস্কার এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার সম্পন্ন করে নির্বাচন দিতে হবে। যেসব দাবিতে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছেন, সেসব দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত এবং মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতে করা ছাড়া কোনো নির্বাচন কাম্য নয়।’
গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন, ‘যারা সংস্কারবিহীন নির্বাচন দাবি করছে, তারা জনগণের কল্যাণ চায় না। একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে চাঁদাবাজি, লুটপাট আর দখলবাজি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অতীতেও দেশের মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছে। আমরা বলতে চাই, দেশের মানুষকে আর কোনো ফ্যাসিবাদের কাছে জিম্মি করা যাবে না। যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে, তাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে হবে। ইতিমধ্যে মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখে বিচলিত হয়ে গেছে। তাই আগামীর প্রত্যাশা পূরণে দেশ ও জাতির কল্যাণে এনসিপির হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’
বাঙ্গরা বাজার থানা এনসিপির সভাপতি কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন এম এ জাহের মুন্সি, মুরাদনগর উপজেলা এনসিপির সভাপতি মো. মিনহাজুল হক, সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক উবাইদুল হক সিদ্দিকী প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র দনগর উপজ ল র উপজ ল ব এনপ র এনস প র জনসভ য় আম দ র ত করত সরক র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

কুমিল্লার মুরাদনগর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। 

এলাকাবাসী জানান, বুধবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন।  সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে কয়েকটি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন, তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল

সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান

মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে। আমাদের অনেক সমর্থক আহত হন।”

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।”

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উসকানিতে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। 

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি
  • উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ৩৫
  • বন্দরে ডেভিল হান্ট অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা আয়াত গ্রেপ্তার  
  • আশুলিয়ায় বিএনপির জনসভা ও এনসিপির পদযাত্রা আজ, নিরাপত্তা জোরদার
  • মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র
  • কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার