বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। এমনকি সবশেষ মাস মার্চে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার বা ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে।

রেমিট্যান্সের এ গতিধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ১৯ দিনেই এসেছে ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২০ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে আসছে ৯ কোটি ডলার বা ১১০৪ কোটি টাকার বেশি।

রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমেছে, বন্ধ হয়েছে অর্থপাচার। এছাড়া খোলা বাজার এবং ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের একই দাম পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এসব কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ১৯ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। এসময় বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯ কোটি ডলারের বেশি। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৯৯ কোটি ডলার। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

আলোচ্য সময়ে ৮ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।

এর আগে সদ্য বিদায়ী মাস মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক দশমিক ৭১ বিলিয়ন বা ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী মার্চে ১৫৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল এক হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ৯ মাসে ৪৭০ কোটি ডলার বেশি এসেছে।

গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো মার্চ মাস। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করলো প্রবাসী আয়। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে। এরপর আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। এরপর জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা।

ঢাকা/এনএফ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম ট য ন স এস ছ ২০ হ জ র ন প রব স র প রথম দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা  সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার। 

সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।

এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেসরকারি ঋণ তলানিতে, তবে ঋণপত্র খোলায় গতি
  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 
  • ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ২৪৩ কোটি ডলার