রাজশাহীতে চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই
Published: 20th, April 2025 GMT
রাজশাহী নগরীর ঘোড়ামারা এলাকায় রিকশায় থাকা এক ব্যক্তির চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকাল পৌনে ৯ টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানা থেকে মাত্র ৪০০ মিটার দূরে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী দিলীপ কুমার প্রমানিক রিলায়েন্স অটো নামের একটি যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন।
দিলীপ কুমার জানান, আগের দিনের বিক্রির প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা নগরের কুমারপাড়া এলাকায় মহাজনের বাসায় রেখেছিলেন। রোববার সকালে তিনি ব্যাগে করে ওই টাকা নিয়ে রিকশায় করে দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে রিকশাচালক হঠাৎ সাগরপাড়া মহল্লার একটি গলির দিকে মোড় নেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই ছিনতাইকারী এসে রিকশার সামনে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। তারা ভুক্তভোগীর চোখে মরিচের গুঁড়ার মতো কিছু ছিটিয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কিছু দেখতে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। ঠিক তখনই ছিনতাইকারীরা তার পিঠের ব্যাগ টানতে শুরু করে। বাধা দিতে গেলে তারা ছুরি দিয়ে আঘাত করে তার ডান হাতের কনুই ও বাম হাতের একটি আঙুল কেটে যায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ব্যাগ থেকে আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে গেলেও মূল ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর রিকশাচালক কোনো ভাড়া না নিয়েই এলাকা থেকে সটকে পড়েন, যা তাকে সন্দেহের আওতায় এনেছে।
দিলীপ কুমারের কর্মস্থলের মালিক বিপুল কুমার ঘোষ বলেন, দিলীপ অনেক দিন ধরে তাদের প্রতিষ্ঠানে সততার সঙ্গে কাজ করছেন। প্রতিদিনই তিনি টাকা নিয়ে যান। ছিনতাইয়ের ঘটনার পরপরই বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করতে কাজ চলছে। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়াও চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ নত ই ছ নত ই র একট
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।