ছবি দেখেই স্থান শনাক্ত করছে চ্যাটজিপিটি, গোপনীয়তা নিয়ে শঙ্কা
Published: 21st, April 2025 GMT
ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য অনেকেই বাসার ঠিকানা বা স্থানের নাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন না। তবে এবার শুধু ছবি বিশ্লেষণ করেই সেটি কোথায় তোলা হয়েছে, তা জানিয়ে দিচ্ছে ওপেনএআইয়ের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটজিপিটি চ্যাটবট। প্রযুক্তির এই অগ্রগতি যেমন বিস্ময়কর, তেমনি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে তৈরি করেছে নতুন উদ্বেগ।
ওপেনএআইয়ের তৈরি সর্বশেষ সংস্করণের এআই মডেল ‘ওথ্রি’ ও ‘ওফোর মিনি’ ছবি বিশ্লেষণে অভূতপূর্ব সক্ষমতা অর্জন করেছে। এসব মডেল আশপাশের দৃশ্য শনাক্ত করে ছবি কোথায় তোলা হয়েছে, তা শনাক্ত করতে পারে। মডেলগুলো এতই শক্তিশালী যে ঝাপসা বা বিকৃত হয়ে যাওয়া ছবি থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভিজ্যুয়াল সংকেত শনাক্ত করতে সক্ষম। এর ফলে ছবিতে থাকা দোকানের সাইনবোর্ড, রাস্তার চিহ্ন, বিলবোর্ড, খাবারের তালিকা বা কোনো নির্দিষ্ট স্থাপত্যশৈলী দেখে ছবিটি কোথায় তোলা হয়েছে, তা জানাতে পারে চ্যাটজিপিটি।
খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, তারা নিজেদের তোলা সাধারণ ছবি আপলোড করে এই সুবিধার কার্যকারিতা যাচাই করেছেন। ছবি দেখে চ্যাটজিপিটি কখনো শুধু শহরের নাম বলছে, আবার কখনো নির্দিষ্ট দোকান বা স্থানের নাম জানিয়েছে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি নিছক কৌতূহলের জায়গায় সীমাবদ্ধ নেই। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে বড় ধরনের গোপনীয়তার ঝুঁকি। বর্তমানে চ্যাটজিপিটির এই সুবিধা নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগ নেই। ফলে ইচ্ছা করলেই যে কেউ অনলাইনে প্রকাশিত যেকোনো ছবি এমনকি ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকের স্ক্রিনশট আপলোড করে জানতে চাইতে পারেন, ‘ছবিটি কোথায় তোলা হয়েছে? ’ এতে অজান্তেই ফাঁস হয়ে যেতে পারে কারও ব্যক্তিগত অবস্থান বা দৈনন্দিন গতিবিধি। তবে এই সুবিধা শতভাগ নির্ভুল নয়। অনেক সময় চ্যাটজিপিটি ভুল করে, অস্পষ্ট তথ্য দেয় বা একাধিকবার একই বিশ্লেষণের পুনরাবৃত্তি করে।
সূত্র: বিজিআর ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।