সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ট্রাকচালক রাশেদুল (৪০) হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভাষ্য, স্ত্রীর কথিত প্রেমিককে ফাঁসাতে বন্ধু রাশেদুলকে গলা কেটে হত্যা করেছেন গ্রেপ্তার সেলিম হোসেন (৩৮)।

গতকাল সোমবার রাতে জেলার ডিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনায় গত রোববার তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়ি গ্রামের নিজ এলাকা থেকে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গতকাল বিকেলে সিরাজগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামি সেলিম জানিয়েছেন, আউয়াল নামের একজনের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে স্ত্রী তাঁর প্রেমিকের কাছে চলে যান। তাঁদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ না হওয়ায় আউয়ালের ওপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন সেলিম।

হত্যার শিকার পিকআপ ভ্যানের চালক রাশেদুলের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায়। তবে তিনি সিরাজগঞ্জে তাড়াশ উপজেলার পশ্চিম ওয়াপদা বাঁধ এলাকায় বাস করতেন। রাশেদুলের সঙ্গে সেলিমের ভালো সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে সেলিম এক দিন তাঁর ঘরে স্ত্রীর ব্যাগে আউয়ালের মানিব্যাগ খুঁজে পান। এতে একটি সিমের কাগজ, আউয়ালের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ছিল। সেলিম মানিব্যাগটি রেখে দেন এবং রাশেদুলকে হত্যার পর লাশের পাশে মানিব্যাগটি ফেলে রেখে আউয়ালকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন। ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় সেলিম ঘুমের ওষুধ মেশানো কোমল পানীয় ও ছুরি নিয়ে বের হন। তিনি মদ খাওয়ার কথা বলে রাশেদুলকে ডেকে নেন। এরপর তাঁকে ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় খেতে দেন। কিছুক্ষণ পর রাশেদুল সংজ্ঞা হারালে কোমরের গুঁজে রাখা ছুরি বের করেন সেলিম। একপর্যায়ে রাশেদুলকে গলা কেটে হত্যা করেন তিনি।

১৯ এপ্রিল সকালে আসানবাড়ি এলাকার একটি ধানখেতের পাশ থেকে রাশেদুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনেরা তাড়াশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

জেলা ডিবির ওসি একরামুল হোসাইন জানান, আদালতের নির্দেশে সেলিমকে গতকাল বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ র শ দ লক আউয় ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। 

সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।

একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।

শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু