নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চর এলাহী ইউনিয়নে বামনী নদীর ভাঙন রোধে ব্লক স্থাপন, নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ ও রেগুলেটর চালু করার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়ার নদীভাঙন এলাকায় ওই কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন চর এলাহী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল তোতা, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মোহাম্মদ আইয়ুব আলী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিমসহ অনেকে। বক্তারা বলেন, কোম্পানীগঞ্জের বামনী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে চর এলাহী এলাকায় একটি রেগুলেটর নির্মাণ এবং বিকল্প একটি খাল খনন করা হয় কয়েক বছর আগে। কথা ছিল রেগুলেটর নির্মাণকাজ শেষ হলে বামনী নদীতে একটি ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ করা হবে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ক্লোজার নির্মাণ করা হচ্ছে না। যার কারণে চাপরাশি খালের দুই পাড়ে ভাঙনে এরই মধ্যে শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে।

বক্তারা হলেন, বর্তমানে বামনী নদী যেভাবে ভাঙছে, তাতে আগামী বর্ষায় নদীতীরবর্তী অনেক বাড়িঘর, ফসলি জমি, মাছের খামার নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বামনী নদীতে ক্লোজার নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি ইতিপূর্বে নির্মাণ করে রাখা রেগুলেটর চালু করার দাবি জানান তাঁরা।

বামনী নদীর ভাঙনের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ভিটেমাটি হারা আবদুল খালেক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বামনী নদী থেকে তাঁর বাড়ি ছিল প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। বছরখানেক আগে তিনি নদীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন অন্যের জমিতে কোনোরকমে ছোট্ট একটি ঘর তৈরি করে মাথায় গুঁজছেন। যে হারে নদী ভাঙছে, তাতে আগামী বর্ষায় সেই বসতীও হয়তো আর থাকবে না।

বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

হালিম সালেহী প্রথম আলোকে বলেন, বামনী নদীর ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণের একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন, রেগুলেটরটি খুলে দেওয়ার। তা করা গেলে নদীর ভাঙন কমে যাবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালী জেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই স্কুলছাত্র শাহরিয়ার হাসান রিমনকে (১৬) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে আহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে সুধারাম মডেল থানায় রিমনের মা বাদী হয়ে দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম ও ছবি প্রকাশ করেনি।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।

আহত শাহরিয়ার হাসান রিমন জেলা শহরের বসুন্ধরা কলোনি বাসিন্দা মো. জামাল উদ্দিন ও ফরিদা ইয়াছমিন দম্পত্তির ছেলে। সে স্থানীয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু

ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনি, কারাগারে ইমামের মৃত্যু

বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে কিশোর গ্যাং সদস্যরা শাহরিয়ার হাসান রিমনকে ধারালো ছুরি এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় রাতে আহত রিমনের মা ফরিদা ইয়াছমিন ২১ জনকে এজহারভুক্ত ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান পরিচালনা করে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।

রিমনের  মা ফরিদা ইয়াছমিন জানান, রিমনের পিঠে, মাথায়সহ মোট ছয়টি ছুরির আঘাত করা হয়। তার অপারেশন ঢাকা মেডিকেল কলেজে করানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা চলছে। তার পিঠের আঘাতগুলো ফুসফুস পর্যন্ত চলে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, হামলাকারীরা ভেবেছিল রিমন মারা গেছে। যখন জানতে পারে সে বেঁচে আছে, তখন তারা ফের হামলা করতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত যায়। রিমনের অপরাধ দুই দল কিশোরের মাঝে চলমান দ্বন্দ্ব মিমাংসা করে দেওয়া। একপক্ষ মানলেও অপরপক্ষ মিমাংসার বিষয়টি মন থেকে মানতে পারেনি। তারাই আমার ছেলের উপর হামলা করেছে।

রিমনের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, রিমনকে ধারালো ছুরি দিয়ে মোট ছয়টি আঘাত করা হয়েছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি রিমনের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

ঢাকায় রিমনের সঙ্গে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদা সুলতানা ইতু জানান, রাতেই রিমনের সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। এরপর তার অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, রিমনের পিঠের আঘাতগুলো গুরুতর। ছুরির আঘাত প্রায় ফুসফুস পর্যন্ত চলে এসেছে। তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে জেলা শহরের বার্লিংটন মোড়ে একদল কিশোর রিমনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বার্লিংটন এলাকাটি কিশোর গ্যাংয়ের আখড়া। এই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, হরিনারায়ণপুর স্কুল, সরকারি মহিলা কলেজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা যাতায়াত করে। প্রতিদিন তাদের উত্ত্যক্ত করা হয়। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। প্রশাসনেরও নজরদারি নেই।

এদিকে, রিমনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করার প্রতিবাদে তার স্কুলের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, স্কুলের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে রিমনের উপর যারা হামলা করেছেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এজহারভুক্ত একজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় আমাদের আরো অনুসন্ধান চলছে। সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অপরাধীদের খুব দ্রুতই আইনের আওতায় আনতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। 
 

ঢাকা/সুজন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্যেই সংস্কার রয়েছে, অচিরেই নির্বাচন দিন : সোহাগ
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩
  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ