সেই রাহুলই লক্ষ্ণৌয়ে ফিরে গড়লেন রেকর্ড, জিতল দিল্লি
Published: 22nd, April 2025 GMT
প্রথমে করলেন ফিফটি। সেই ফিফটিতেই পৌঁছালেন আইপিএলে দ্রুততম ৫০০০ রানের মাইলফলকে। এরপর ছক্কা মেরে দিল্লি ক্যাপিটালকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন। সাবেক দল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসকে জবাব দিতে লোকেশ রাহুলের আর কী চাই!
ঘরের মাঠ অটল বিহারী বাজপেয়ী স্টেডিয়ামে আজ আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৯ রান করেছিল লক্ষ্ণৌ। জবাবে রাহুলের অপরাজিত ৫৭ রানের সুবাদে ৮ উইকেট ও ১৩ বল বাকি রেখে জিতে গেল দিল্লি।
৮ ম্যাচের ৬টিতে জেতা দিল্লির পয়েন্ট হলো ১২। সমান পয়েন্ট গুজরাট টাইটানসেরও। কিন্তু নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় গুজরাট শীর্ষে আর দিল্লি দুইয়েই রয়ে গেল।
আইপিএলে সর্বশেষ তিন মৌসুম লক্ষ্ণৌর হয়ে খেলেছেন রাহুল। ভারতের উত্তর প্রদেশের দলটিকে প্রত্যেক মৌসুমেই নেতৃত্বও দিয়েছেন। তাঁর অধিনায়কত্বে ২০২২ ও ২০২৩ সালে লক্ষ্ণৌ প্লে–অফে উঠলেও ২০২৪ সালে ব্যর্থ হয়েছে। গত বছর একটি ম্যাচে দল হারার পর লক্ষ্ণৌ মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কার ধমকও খেতে হয়েছে রাহুলকে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ছেড়েও দিয়েছে।
রাহুলকে এবারের মেগা নিলাম থেকে কিনে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। সেই তিনিই প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় হিসেবে প্রথমবার লক্ষ্ণৌয়ে গিয়ে তাদের কষ্ট দিলেন; সঙ্গে গড়লেন আইপিএলে দ্রুততম ৫০০০ রানের রেকর্ড।
এই মাইলফলকে পৌঁছাতে রাহুলের লাগল ১৩০ ইনিংস। তিনি পেছনে ফেললেন ডেভিড ওয়ার্নারকে। অস্ট্রেলিয়ার এই কিংবদন্তির আইপিএলে ৫০০০ রান ছুঁতে লেগেছিল ১৩৫ ইনিংস। আইপিএল ইতিহাসের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচ হাজারি ক্লাবে নাম লেখালেন রাহুল।
তবে আজ লক্ষৌকে অল্পতে বেঁধে ফেলার কাজে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন মুকেশ কুমার। দিল্লির এই পেসার ৩৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট, যা তাঁর আইপিএল ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। ম্যাচসেরার পুরস্কারও মুকেশের হাতে উঠেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরলক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস: ২০ ওভারে ১৫৯/৬ (মার্করাম ৫২, মার্শ ৪৫, বাদোনি ৩৬; মুকেশ ৪/৩৩, স্টার্ক ১/২৫, চামিরা ১/২৫)।
দিল্লি ক্যাপিটালস: ১৭.
ফল: দিল্লি ক্যাপিটালস ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুকেশ কুমার।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফার মাইলফলকে সিটি ব্যাংক
২০২৪ সালে এক অনন্য মাইলফলক স্থাপন করেছে দেশীয় মালিকানাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকটি সমন্বিতভাবে ১,০১৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে যা এখন পর্যন্ত ব্যাংকের ৪২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সিটি ব্যাংক এককভাবে ১,০৮৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করলেও সহযোগী দুটি প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বাজারমূল্য হ্রাস পাওয়ায় প্রভিশন ব্যয় হওয়ার কারণে ব্যাংকের সমন্বিত নিট মুনাফা ১,০১৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সিটি ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত নিট মুনাফা ছিল ৬৩৮ কোটি টাকা। সে তুলনায় ২০২৪ সালে সমন্বিত মুনাফা বেড়েছে ৩৭৬ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ- যা সিটি ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করে ব্যাংকটি। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হয় ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ, যার মধ্যে ১২.৫ শতাংশ নগদ এবং ১২.৫ শতাংশ বোনাস। গত বছরও একই হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল সিটি ব্যাংক। শেয়ারধারীদের অনুমোদনের পর এই লভ্যাংশ বার্ষিক সাধারণ সভায় বিতরণ করা হবে। ঘোষিত নগদ লভ্যাংশে ব্যয় হবে প্রায় ১৭০ কোটি টাকারও বেশি। পাশাপাশি বোনাস হিসেবে প্রতি ১০০ শেয়ারের বিপরীতে ১২.৫টি নতুন শেয়ার দেওয়া হবে।
রেকর্ড মুনাফার প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয়েও। ২০২৩ সালের ৪.৭৪ টাকার তুলনায় ২০২৪ সালে ইপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫৩ টাকায়, অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ৫৮.৯ শতাংশ। একইভাবে শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য বেড়ে হয়েছে ৩৪.৩৯ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৫.৩৮ টাকা বা ২০.৪১ শতাংশ বেশি।
রেকর্ড মুনাফার কারণ জানতে চাইলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখে আমানত রেখেছে। আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে মুনাফায় বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। আমরা কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছি, যা কর্মীদের উৎসাহিত করেছে। আমাদের পরিচালনা পর্ষদ সৎ ও মেধাবী। ব্যাংকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ের সুশাসন বিদ্যমান। এসবই রেকর্ড মুনাফার পেছনের মূল কারণ।’
২০২৪ সালে ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ৩১ শতাংশ বা ১২,১৭৭ কোটি টাকা, যেখানে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ শতাংশ বা ৪,৮৩১ কোটি টাকা। এই উদ্বৃত্ত তহবিলের বড় একটি অংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা আগের বিনিয়োগ থেকে ৬,১৫০ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২,৪৮৮ কোটি টাকায়।