মহেশখালীতে বসতবাড়ির সামনে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
Published: 23rd, April 2025 GMT
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মোহাম্মদ কাছিম আলী (৩২) নামের এক যুবকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের কামিতার পাড়া মনচোরাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কাছিম আলী ওই এলাকার নুরুল আলমের ছেলে।
নিহত ব্যক্তির পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছে, সকালে কাছিম আলীর মামা ও একই এলাকার বাসিন্দা গফুর মিয়া মাছ ধরার ট্রলারে শ্রমিক সরবরাহের বিষয়ে আবু তৈয়ব নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া করছিলেন। এ সময় কাছিম আলী দুজনকে ঝগড়া করতে নিষেধ করেন।
বিষয়টি নিয়ে কাছিম আলীর ওপর ক্ষুব্ধ হন গফুর মিয়া। এর জেরে গফুর মিয়ার ছেলে শাকিব খান কাছিম আলীর ঘরে হামলা করেন। একপর্যায়ে বসতবাড়ির সামনে কাছিম আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। তাঁকে উদ্ধার করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শেখ কামাল বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামাতো ভাইয়ের হাতে কাছিম আলী খুন হয়েছেন। নিহত কাছিম আলী পেশায় জেলে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শাকিব খান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। মহেশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রচুল কুমার শীল বলেন, লাশটি উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত শাকিব খান পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ছ ম আল
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস