অবৈধ অটোরিকশা ও হকার বর্জনের আহ্বান ডিএনসিসি প্রশাসকের
Published: 24th, April 2025 GMT
ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশায় না চড়তে এবং ফুটপাত দখল করে বসা হকারদের থেকে কেনাকাটা না করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অঞ্চল-৭ এর গণশুনানিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রশাসক বলেন, “প্রতিটি গণশুনানিতে দুটি সাধারণ অভিযোগ পাই—অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ এবং ফুটপাত দখলদার হকার উচ্ছেদ। অথচ অনেকেই নিজেরাই এই যানবাহনে চলাচল করছেন ও হকারদের থেকে পণ্য কিনছেন। আপনারা যদি এই পরিবহনে না ওঠেন এবং ফুটপাতে কেনাকাটা না করেন, তাহলে তাদের টিকে থাকা কঠিন হবে।”
তিনি আরো জানান, প্রধান সড়কে অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ। ডিএনসিসির উদ্যোগে বুয়েটের মাধ্যমে একটি স্ট্যান্ডার্ড অটোরিকশা ডিজাইন তৈরি করা হচ্ছে। সেটি অনুমোদিত হলে লাইসেন্সধারীরাই নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করতে পারবেন।
ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নগরবাসীর সহায়তা কামনা করে তিনি বলেন, “ঢাকার প্রতিটি এলাকায় মার্কেট ও বাজার রয়েছে। দয়া করে ফুটপাতের হকারদের পণ্য না কিনে বৈধ দোকান থেকে কেনাকাটা করুন। তাহলে আমাদের অভিযানে সাফল্য আসবে।”
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের নিজ বাড়ি পরিষ্কারে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কর্মীরা সবার বাড়িতে ঢুকে ওষুধ দিতে পারে না। বাড়ির ভেতর ও বাউন্ডারিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র থাকছে। নিজেদের বাড়ি নিজেরাই পরিষ্কার করতে হবে।”
এক বাসিন্দার হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক জানান, আইনের বাইরে গিয়ে কয়েক বছরের কর মওকুফের সুযোগ নেই। তবে রিবেট (কর ছাড়) দেওয়ার সুযোগ রয়েছে, যা আবেদন করলে বিবেচনায় আনা হবে।
তিনি আরো জানান, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের জন্য কর মেলার আয়োজন করা হবে। সেখানে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে একদিনেই কর পরিশোধ ও রিবেট আবেদন করা যাবে।
গণশুনানিতে অঞ্চল-৭ ও ৮-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স ফ টপ ত
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনা-ঢাকা রুটে আবারও বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
রাবেয়া বেগম আজ রোববার সকাল নয়টার দিকে ঢাকা থেকে পাবনার বেড়াগামী আলহামরা পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন। গন্তব্যের ২০ কিলোমিটার আগে পৌঁছার পর জানতে পারেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর হয়ে পাবনার বাস যেতে পারবে না। শাহজাদপুর বাসস্ট্যান্ডের অনেক আগে তালগাছি এলাকায় সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তাঁকে বেড়ায় পৌঁছাতে হয়।
পাবনা ও শাহজাদপুরের অনেক যাত্রীকে আজ রোববার দিনভর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এই দুর্ভোগের কারণ, পাবনা ও শাহজাদপুর বাসমালিকদের পুরোনো দ্বন্দ্ব। আজ সকাল থেকে দুই এলাকার বাস চলাচল আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। পাবনা থেকে শাহজাদপুর হয়ে ঢাকা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে কোনো বাস চলাচল করছে না। একইভাবে শাহজাদপুর থেকেও পাবনার দিকে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না।
বাসমালিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে চলতি বছরেই অন্তত চারবার বাস চলাচল বন্ধ ছিল। আর গত সাত-আট বছরে বাস চলাচল বন্ধ ছিল অন্তত ৩০ বার। একবার বাস চলাচল বন্ধ হলে তা চালু হতে সময় লেগেছে পাঁচ দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত।
বাসমালিক ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতি ও পাবনার নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রুট ও সময়সূচি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। পাঁচ-ছয় দিন আগে নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির লোকজন শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতির মালিকানাধীন নবীনবরণ পরিবহন নামের একটি বাস আটকায়। এর প্রতিবাদে শাহজাদপুরের বাসমালিকেরা নগরবাড়ী সমিতির মালিকানাধীন বাসগুলো চলাচলে বাধা দেন। ঘটনার জেরে গতকাল শনিবার পাবনার দাশুড়িয়ায় নবীনবরণ পরিবহনের একটি বাস আটকে রাখে পাবনা বাসমালিক সমিতি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আজ সকালে শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতি শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে পাবনার সব বাসের চলাচল বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে পাবনার সড়ক দিয়েও শাহজাদপুরের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাবনা ও শাহজাদপুর উভয় সমিতির দুই শতাধিক বাস আজ সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকেরাও।
এদিকে পাবনা থেকে বেড়া হয়ে ঢাকাগামী বেশির ভাগ পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। দু–একটি বাসের কাউন্টার খোলা থাকলেও সেসব বাস বেড়া থেকে যাত্রী নিয়ে কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে অথবা নাটোরের বনপাড়া হয়ে প্রায় ১০০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে ঢাকা যাচ্ছে।
পাবনা এক্সপ্রেস পরিবহনের বেড়া কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ‘শাহজাদপুর হয়ে পাবনার কোনো বাস যেতে না পারায় আমাদের বাসগুলো হয় ফেরি হয়ে, না হয় নাটোরের বনপাড়া ঘুরে ঢাকা যাচ্ছে।’
শাহজাদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পাবনা ও নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতি আমাদের বাস চলাচলে বাধা দেওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রীদের যেমন দুর্ভোগ হচ্ছে, তেমনি উভয় মালিক সমিতিরই ক্ষতি হচ্ছে। দুই পক্ষ আলোচনায় বসলে আশা করি সমাধানের পথ পাওয়া যাবে।’
পাবনা বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোমিন মোল্লা বলেন, ‘শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতির লোকজন প্রায় এক মাস ধরে নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির বাসগুলো শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে যেতে দিচ্ছিল না। আজ থেকে তারা পাবনার সব বাসের চলাচল বন্ধ করে দিল। শাহজাদপুর মালিক সমিতি ছোটখাট যেকোনো ব্যাপার হলেই তাদের এলাকার ওপর দিয়ে পাবনার বাস চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।’