মার্কিন কোম্পানিতে কাজী আনিসের শেয়ার অবরুদ্ধ, আরও ৬ বাড়ি ও ৪ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ
Published: 24th, April 2025 GMT
জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী আনিস আহমেদের নামে যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানিতে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর বাইরে জেমকন গ্রুপের মালিক ও যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, তাঁর দুই ভাই, এক বোন ও মা এবং মৃত বাবার নামে থাকা সাতটি বাড়ি ও চারটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পঞ্চগড়ে থাকা এই পরিবারের আরও জমি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
দুদক লিখিতভাবে আদালতকে বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন ছাড়াই জেমকন গ্রুপের এই পরিচালক যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চগড়ে ১৭৫টি দলিলে কেনা কাজী নাবিল আহমেদের জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ধানমন্ডিতে তাঁর ছয়তলা একটি বাড়ি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। কাজী নাবিল আহমেদের বাবা কাজী শাহেদ আহমেদের নামে থাকা তিনটি বাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। নাবিলের মা আমিনা আহমেদের নামে থাকা ধানমন্ডিতে তিনটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া কাজী আনিস আহমেদের নামে ধানমন্ডিতে থাকা ছয়তলা বাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর বাইরে ধানমন্ডিতে কাজী ইনাম আহমেদের নামে থাকা বাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আর গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ মার্চ নাবিল আহমেদ, তাঁর দুই ভাই, এক বোন, মা, মৃত বাবাসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা ৩৬টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, জেমকন গ্রুপের ৩৬টি কোম্পানির ৪ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৮৬৮টি শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের দাম ৬০ কোটি ৪৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জেমকন গ্রুপের কাজী নাবিল আহমেদ, তাঁর দুই ভাই ও মা এবং মৃত বাবাসহ ১০ জনের নামে থাকা ১১৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কাজী নাবিল আহমেদের ২১টি ব্যাংক হিসাব, তাঁর ভাই আনিস আহমেদের ২০টি, কাজী ইনাম আহমেদের ১০টি এবং তাঁদের মা আমিনা আহমেদের নামে থাকা ২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এর বাইরে কাজী নাবিল আহমেদের মৃত বাবার নামে থাকা সাতটি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া কাজী নাবিল আহমেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট পাঁচজন মালিয়া মান্নান আহমেদ, কাজী সিরাজ আহমেদ, লতিফা মান্নান ইসলাম, রাইয়াদ জায়েদ মান্নান ও আবু মুসার নামে থাকা ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি কাজী নাবিল আহমেদ, তাঁর দুই ভাই ও তাঁদের মায়ের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে সেদিন আদালতকে বলা হয়েছিল, জেমকন গ্রুপের বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক জালিয়াতি ও অন্যান্য দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ব ল আহম দ র জ মকন গ র প র আহম দ র ন ম ধ নমন ড ত র অবর দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।