আওয়ামী লীগের বিচার, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে সর্বদা রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন এনসিপি নেতারা।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে মাওনা উড়ালসড়কের নিচে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মেজর (অব.

) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সভাপতিত্বে ও এনসিপি নেতা আবু রায়হানের সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের মধ্যে যেসব জায়গায় সবচেয়ে বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার একটি আমাদের মাওনা চৌরাস্তা। এখানকার ওয়াপদা মোড়ে এখনো শহীদের রক্তের দাগ যায় নাই। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক নেতা এখনো আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আপনাদের স্পষ্ট বলে দিতে চাই, মাওনার মাটিতে, এই ওয়াপদার মাটিতে যদি সবচেয়ে বড় আন্দোলন হতে পারে, সেই আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে এবং অন্য কোনো দল ফ্যাসিজম ধরে রাখতে চায়, তাকে রুখে দিতে এই মাওনাতেই আবার প্রয়োজন পড়লে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা সরকারকে স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আমরা আওয়ামী লীগের বিচারের অত্যন্ত ধীরগতি দেখতে পাচ্ছি। আট মাস পরও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের স্পষ্ট কোনো বিচার আমাদের চোখে পড়েনি। এই বিচারব্যবস্থাকে দ্রুততর করার জন্য যত ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, আমি বিশ্বাস করি আপনারা নেবেন। যদি আপনারা সেই ব্যবস্থা না গ্রহণ করেন, তাহলে জনগণই সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

এনসিপি নেতা আবু রায়হান বলেন, ‘এনসিপি কথা বলতে বিশ্বাসী না, আমার কাজে বিশ্বাসী। আমরা আন্দোলনের দল। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছি যে আমরা কী পারি। আমাদের দাবি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের বিচার করতে হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ