প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘‘প্রবাসীদের সহযোগিতার কারণে বাংলাদেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।’’

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা আজ যে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পেরেছি, তার মূলে আপনারা। আপনারা সহযোগিতা না করলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম না। আপনারা কখনো আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন ভাববেন না।’’

বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য সেবা আরো সহজ করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিমানবন্দরে প্রবাসীদের ভিআইপি মর্যাদায় সেবা প্রদান করা হবে। প্রবাসীদের দেশে আসা-যাওয়া যেন শান্তিপূর্ণ ও আনন্দদায়ক হয়, আমরা সেই ব্যবস্থা করব।’’

বিমানে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে কার্গো ভাড়া কমানোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এর জবাবে ড.

ইউনূস বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিমান পরিবহন দ্রুত করা এবং কার্গো ভাড়া কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ঢাকা বিমানবন্দর ছাড়াও চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর থেকে কীভাবে সহজে পণ্য পরিবহন করা যায়, তা নিয়েও আমরা কাজ করছি।’’

‘‘সাধারণত যাত্রী পরিবহনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে, এখন আমরা বিমানে পণ্য পরিবহনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।’’- যোগ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, পাসপোর্টসহ সব ধরনের সেবা অনলাইনভিত্তিক করা হচ্ছে। তিনি প্রবাসীদের পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানান।

মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব স দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ