চট্টগ্রামের বলীখেলায় অভিনেতা মোশাররফ করিম
Published: 25th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের আবদুল জব্বারের বলীখেলা এই অঞ্চলের প্রাণস্পন্দন। এই বলীখেলা ও মেলাকে ঘিরে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক কিংবা শৌখিন চিত্রগ্রাহকও ছুটে আসেন লালদীঘির মাঠে। আজ শুক্রবার জব্বারের বলীখেলায় প্রথমবারের মতো এসেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে বলীখেলার রিংয়ের আশপাশে মোশাররফ করিমকে দেখে সাধারণ মানুষজন উৎসুক হয়ে ওঠেন। তিনি একটি বিজ্ঞাপনের কাজে এসেছেন বলে মেলা কমিটি সূত্রে জানা গেছে। মোশাররফ করিমের গলায় ঝুলছিল গ্রামীণফোনের একটি পরিচয়পত্র।
একপর্যায়ে বলীখেলা কাভার করতে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মী এবং মেলার স্বেচ্ছাসেবকদের কেউ কেউ মোশাররফ করিমের সঙ্গে ছবি তোলার আবদার করেন, তুলেছেনও। কথাও বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গেও। মোশাররফ করিম বলেন, ‘বলীখেলা বা কুস্তি খেলা আমাদের ঐতিহ্যগত একটা খেলা। চট্টগ্রামে ১১৬ বছর ধরে এটা হচ্ছে, সত্যি বিস্ময়কর। আগে কুস্তি খেলা সব জায়গায় হতো। পুরান ঢাকায়ও হতো। কিন্তু এখন হয় না। চট্টগ্রাম এটা ধরে রেখেছে।’
বলীখেলায় মোশাররফ করিম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল খ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।