ইজারাদারের লোকজনের সঙ্গে হকারদের সংঘর্ষ
Published: 25th, April 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়কের ওপর অস্থায়ী বাজারে খাজনা আদায় নিয়ে ইজারাদারের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে হকারদের। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় শুরুতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মাওনা অস্থায়ী বাজারের ইজারাদার মো.
এ ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যস্ততম মাওনা চৌরাস্তায় মহড়া দিচ্ছে। একপক্ষ
অন্য পক্ষকে ধাওয়া করছে। এ সময় একজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মহাসড়কের ওপর ফেলে রাখতে দেখা যায়।
স্থানীয় সূত্র আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নজরুল ইসলাম বেপারি, আশিক ও ইমরানের নাম জানা গেছে। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জানান, আগে এখানে তাদের কখনও খাজনা দিতে হয়নি। সম্প্রতি একটি রসিদ ধরিয়ে দিয়ে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইজারাদারের সঙ্গে দোকানিদের কয়েকদিন ধরেই ঝামেলা চলছে। ব্যবসায়ীরা বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন। শুক্রবার খাজনা আদায় করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
হকারদের পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া জাহিদুল ইসলামের পরিচয় জানা যায়নি। তাঁর বক্তব্যও নেওয়া যায়নি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। এরই মধ্যে দু’জনকে আটক করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, নিয়ম মেনেই ৭৪ লাখ টাকায় কাজল ফকির মাওনা চৌরাস্তার ইজারা নিয়েছেন। ১৪ এপ্রিল থেকে তিনি খাজনা আদায় করছেন। অন্য একটা পক্ষ ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ তুলছেন। এই নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থায় চলে গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ইজ র দ র র এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর লুট হওয়া বই ফেরত পেয়েছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার কর্তৃপক্ষ। রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুপক্ষের সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে লুট হওয়া প্রায় চার শতাধিক বই পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়।
এর আগে, পাঠাগারে ‘নাস্তিকদের’ বই, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে লুট শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয় দেশের শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে। এরপরই প্রশাসন বই ফেরতের উদ্যোগ নেয়।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এই সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েম ইমরান, ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শহিদুল্লাহ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি খায়রুল মুন্সী, উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান, অভয়ারণ্য পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র, সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী খেলাফত মজলিশের নেতা গোলাম রব্বানী এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।
উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভার শুরুতে ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ উভয়পক্ষকে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। পরে পাঠাগারের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ কীভাবে বইগুলো পাঠাগার থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তার বর্ণনা তুলে ধরেন। পরে যেসব যুবক বই নিয়ে আসার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের পক্ষ থেকে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী রিশাদ বক্তব্য দেন। বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে বইগুলো অভয়ারণ্য পাঠাগারে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গোলাম রব্বানী রিশাদ বলেন, ‘‘পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করেছি, তারা যেন কোনো ধর্মবিরোধী বা নিষিদ্ধ বই পাঠাগারে না রাখেন।’’
পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘পাঠাগারে কোনো ধর্মবিরোধী বই ছিল না। সেদিন যে বইগুলো নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, জাফর ইকবাল প্রমুখের বই ছিল।’’
ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘‘উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। দুই পক্ষই বৈঠকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে বইগুলো পাঠাগারে দিয়ে আসা হয়েছে।’’
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে একদল যুবক গিয়ে প্রায় চার শতাধিক বই লুট করেন। পরে বইগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন তারা। সেদিন দাবি করা হয়েছিল, বইগুলো ধর্মবিরোধী।
ঢাকা/কাওছার/রাজীব