শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল বিষয়ে পিছু হটল ট্রাম্প প্রশাসন
Published: 26th, April 2025 GMT
তীব্র বিরোধিতার মুখে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বিচার বিভাগের অ্যাটর্নি এলিজাবেথ কারলান ফেডারেল আদালতকে জানিয়েছেন, অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থায় ভিসা পর্যালোচনা ও বাতিল নিয়ে কাজ করছেন।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল ও পড়াশোনার আইনি অধিকার কেড়ে নেওয়ায় আদালতে ১০০টির বেশি মামলা হয়েছে। এরপরই সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়া হলো।
মার্কিন হায়ার এডুকেশনের এক হিসাবে দেখা গেছে, ২৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুমানিক ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর ওপর ভিসা বাতিলের প্রভাব পড়েছে।
আরও পড়ুনতহবিল স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা২২ এপ্রিল ২০২৫মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর অনেক শিক্ষার্থীকে জোর করে বের করে দেওয়ায় কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া নির্দেশনায় সরকারি অর্থ বরাদ্দ বাতিলের হুমকি দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মামলা দায়ের করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। মামলার শুনানিতে গতকাল শুক্রবার এক বিচারক জানান, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় ঐকমত্যে পৌঁছেছে এবং সরকার তাদের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলে ট্রাম্প প্রশাসনের সরে আসার সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকাল রাতে একটি নিউজ প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমসও। এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাঁরা এখন নিরাপদে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুনটাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং: দেশসেরা বুয়েট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবির অবস্থান কোথায়২৫ এপ্রিল ২০২৫শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তিনটি বিষয়ের কথা বলা হচ্ছে। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর তীব্র বিরোধিতা। দ্বিতীয়ত, এ সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন মহল থেকে চাপ।
এর আগে শিক্ষার্থী ভিসা (স্টুডেন্ট ভিসা) নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ছিল—১.
ট্রাম্প প্রশাসনের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চের পর থেকে ১৭৪ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়। এর ফলে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা হারিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত যদি বহাল থাকত, তাহলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হতো।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।