বিকেএসপিতে আবাহনীর জয়, সঙ্গে নিজেদের ম্যাচের চাপ—সব মিলিয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জন্য ছিল এক কঠিন দিন। শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকতে হলে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না। শেষ দুই ওভারে ২৩ রান দরকার ছিল মোহামেডানের, সেই কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। তার ঝোড়ো ক্যামিওতে (১৩ বলে ২১ রান) শেষ বলে জয় নিশ্চিত করে শিরোপার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছে মোহামেডান।

মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করা গাজী গ্রুপ ২৩৬ রানে অলআউট হয়। জবাবে ২৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় মোহামেডান। দ্বিতীয় ওভারেই আনিসুল ইসলাম ইমন এবং কিছুক্ষণ পর তৌফিক খান তুষার ফেরেন। এরপর রনি তালুকদার ও অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয় গড়ে তোলেন ধীরগতির ৭৫ রানের জুটি।

রনি করেন ৮৩ বলে ৫৫ রান, আর হৃদয় করেন ৫৪ বলে ৩৭ রান। দুজনের বিদায়ের পর আউট হয়ে যান আরিফুল ইসলামও। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তবে রানরেটের চাপের কাছে তারা প্রত্যাশা মেটাতে পারছিলেন না। মাহমুদউল্লাহ ৪৯ রানে ফিরলে মাঠে নামেন নাসুম আহমেদ। ম্যাচ জিততে শেষ ২ ওভারে ২৩ রান করতে হতো মোহামেডানকে।

শেষ ওভারে পারভেজ হোসেন জীবনের প্রথম দুই বলে এক রান আসে, পরের তিন বলে নাসুম একটি ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে কাজটা সহজ করে ফেলেন। শেষ বলে এক রান নিয়ে মোহামেডানকে জয় এনে দেন নাসুম। অপরপ্রান্তে সাইফউদ্দিন অপরাজিত থাকেন ৫৫ বলে ৩০ রানে।

এর আগে ব্যাট হাতে গাজী গ্রুপের মুনিম শাহরিয়ার ৮০ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। তবে তার আউটের পর দ্রুত উইকেট হারায় দলটি। শেষদিকে তাহজিবুল ইসলাম (৩২) ও পারভেজ জীবন (৩৩) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও দলীয় স্কোর বড় হয়নি। মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নেন তিনটি করে উইকেট।

এই জয়ের ফলে সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে আগামী মঙ্গলবার আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচটা রূপ নিয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। সেই ম্যাচে যে দল জিতবে, তাদের হাতেই উঠবে শিরোপা। সেই ম্যাচে মোহামেডান জিতলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হবে। মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় মোহামেডানের হাতে উঠবে শিরোপা। আর ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে চ্যাম্পিয়ন হবে আবাহনী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড প এল

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ