রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় এক নারীর ব্যাগ ছিনতাই ও তাকে গাড়ির সঙ্গে টেনেহিঁচড়ে আহত করার ঘটনায় স্বপ্রণোদিতভাবে মামলা করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার পারভীন।

মঙ্গলবার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

আগামী ২০ জুলাই এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আপেল মাহমুদ এ তথ্য জানিয়েছেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সিদ্ধেশ্বরীর গ্রিনল্যান্ড টাওয়ারের সামনে এক নারী রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। চলন্ত একটি সাদা প্রাইভেটকার থেকে এক ছিনতাইকারী হঠাৎ জানালা দিয়ে তার ভ্যানিটি ব্যাগ টেনে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে ওই নারী রাস্তায় পড়ে যান এবং ছিনতাইকারীরা তাকে গাড়ির সঙ্গে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে।

পুরো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কীভাবে প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে এমন একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটে এবং আশপাশের লোকজন পরে তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। ঘটনাটি জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা ও পুলিশ রেগুলেশন বুক, ১৯৪৩-এর বিধি ২৪৩/২৪৪ অনুযায়ী, এমন আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে থানা কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক মামলা দায়ের করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পুলিশের নির্লিপ্ততা ও ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে আদালত নিজ উদ্যোগে মামলা করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে প্রতীয়মান হয় যে, এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩৯২, ৩৭৯, ৩২৫ এবং ৩৪ ধারায় ডাকাতি, চুরি, গুরুতর আঘাত প্রদান ও একাধিক ব্যক্তির সমবেত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিষয়টি তদন্ত করা অপরিহার্য। এ প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপারকে আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দি গ্রহণ এবং ভিডিওসহ প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে ১৭৩ ধারার অধীনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ