কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, সাম্য, মানবিক ন্যায়বিচারসহ তিনটা নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা লড়াই করি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসে দিল্লির প্রয়োজনে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিল ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। এগুলো আমাদের দাবি ছিল না। এই যে চাপিয়ে দেওয়া তিনটা তথ্যের মধ্যে সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এক হলে এইটাকে বলে ফ্যাসিবাদ। এটা হিটলারও বিশ্বাস করত। জার্মান জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। জেনেশুনে ফ্যাসিস্ট সংবিধান আমরা রাখছি। এই জুলাই আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা এই সংবিধান বাতিল করতে পারি নাই। এই দায় আমাদের। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাববৈঠকী আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান: রাষ্ট্র গঠন ও আমাদের দায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, চাপিয়ে দেওয়া সংবিধান যখন তরুণরা বাতিল চাইল, তখন বলা হলো যারা ৭২ এর সংবিধান বাতিল চায়, তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ মানে না। এই প্রপাগান্ডা আওয়ামী লীগ শুরু করল, শেষ পর্যন্ত বিএনপিও একই সুরে কথা বলতে শুরু করল। এই প্রজন্ম কখনো ৭১ অস্বীকার করে নাই। বরং তারা ৭১  কে পুণরায় দাখিল করতে চায়, যেটা হরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণের গৌরব ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। যার নেতৃত্বে ছিলেন জিয়াউর রহমানসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা।

ফরহাদ মজহার বলেন, বিএনপি বলছে ৭২ এর সংবিধান বাতিল করা যাবে না। এরা কি জিয়াউর রহমানের অনুসারী। আমাকে কেউ খারাপ ভাবে নিবেন না। আমি বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠভাবে পক্ষে থেকেছি। বিএনপির ওপর হামলা-মামলার বিরুদ্ধে থেকেছি। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে জিয়াউর রহমান সাম্য ও ন্যায় বিচারের জন্য।

কনক রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কবি ও রাজনৈতিক চিনু কবির, লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, ভাববৈঠকির সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রায়হান কবীর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.

ইলিয়াস প্রামাণিক, ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ। 

এর আগে দুপুরে বিশিষ্ট কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২ এর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ‘গণঅভ্যুত্থানত্তোর আলাপচারিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে বলেন, নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে আবু সাঈদ বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে। শহীদ আবু সাঈদ প্রবেশ করেছে এক অবিনশ্বর জীবনে। আবু সাঈদের জীবনদান দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দার্শনিক ঘটনা বলে অভিহিত করেন তিনি। 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি আমরা বিশ্বসভায় শক্তিশালী স্থান অর্জন করতে চাই, তাহলে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক উঁচু স্তরে পৌছাতে হবে। 

এসময় উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী, রেজিস্ট্রার ড. হারুন-অর রশিদ এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. ইলিয়াছ প্রামানিক বক্তব্য রাখেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ফরহ দ মজহ র আম দ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ