সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এক হলে এটাকে বলে ফ্যাসিবাদ: ফরহাদ মজহার
Published: 1st, May 2025 GMT
কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, সাম্য, মানবিক ন্যায়বিচারসহ তিনটা নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা লড়াই করি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসে দিল্লির প্রয়োজনে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিল ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। এগুলো আমাদের দাবি ছিল না। এই যে চাপিয়ে দেওয়া তিনটা তথ্যের মধ্যে সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এক হলে এইটাকে বলে ফ্যাসিবাদ। এটা হিটলারও বিশ্বাস করত। জার্মান জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। জেনেশুনে ফ্যাসিস্ট সংবিধান আমরা রাখছি। এই জুলাই আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা এই সংবিধান বাতিল করতে পারি নাই। এই দায় আমাদের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাববৈঠকী আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান: রাষ্ট্র গঠন ও আমাদের দায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাপিয়ে দেওয়া সংবিধান যখন তরুণরা বাতিল চাইল, তখন বলা হলো যারা ৭২ এর সংবিধান বাতিল চায়, তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ মানে না। এই প্রপাগান্ডা আওয়ামী লীগ শুরু করল, শেষ পর্যন্ত বিএনপিও একই সুরে কথা বলতে শুরু করল। এই প্রজন্ম কখনো ৭১ অস্বীকার করে নাই। বরং তারা ৭১ কে পুণরায় দাখিল করতে চায়, যেটা হরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণের গৌরব ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। যার নেতৃত্বে ছিলেন জিয়াউর রহমানসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা।
ফরহাদ মজহার বলেন, বিএনপি বলছে ৭২ এর সংবিধান বাতিল করা যাবে না। এরা কি জিয়াউর রহমানের অনুসারী। আমাকে কেউ খারাপ ভাবে নিবেন না। আমি বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠভাবে পক্ষে থেকেছি। বিএনপির ওপর হামলা-মামলার বিরুদ্ধে থেকেছি। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে জিয়াউর রহমান সাম্য ও ন্যায় বিচারের জন্য।
কনক রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কবি ও রাজনৈতিক চিনু কবির, লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, ভাববৈঠকির সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রায়হান কবীর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.
এর আগে দুপুরে বিশিষ্ট কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২ এর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ‘গণঅভ্যুত্থানত্তোর আলাপচারিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে বলেন, নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে আবু সাঈদ বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে। শহীদ আবু সাঈদ প্রবেশ করেছে এক অবিনশ্বর জীবনে। আবু সাঈদের জীবনদান দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দার্শনিক ঘটনা বলে অভিহিত করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি আমরা বিশ্বসভায় শক্তিশালী স্থান অর্জন করতে চাই, তাহলে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক উঁচু স্তরে পৌছাতে হবে।
এসময় উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী, রেজিস্ট্রার ড. হারুন-অর রশিদ এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. ইলিয়াছ প্রামানিক বক্তব্য রাখেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ফরহ দ মজহ র আম দ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “জুলাই সনদ হতে হবে, জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। নির্বাচিত যে সরকার আসুক এই সদন বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকবে।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গাজীপুরের রাজবাড়ি সড়কে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র হতেই হবে। এর বিকল্প আমরা দেখতে চাই না। সরকার সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে। জুলাই সনদ শুধু সংস্কার হলে হবে না, এটি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে ঐক্যমত হতে হবে।”
আরো পড়ুন:
ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, ৫ আগস্টের আগেই অন্তবর্তীকালীন সরকার এবং সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে পারবেন। আমরা সবাই মিলে আকাঙ্ক্ষিত গণঅভ্যুত্থানের একবছর উদযাপন করতে পারব।”
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মুহিম, মো. মহসিন উদ্দিন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের সাবেক আহ্বায়ক নাবিল আল ওয়ালিদ।
এনসিপির পথসভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন মোড়ে ও সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাতে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করা হয়। রাজবাড়ীর সড়কে বন্ধ থাকে সব ধরনের যান চলাচল।
এর আগে, এনপিপির কেন্দ্রীয় নেতরা টাঙ্গাইলের পথসভা শেষে গাজীপুরে কালিয়াকৈরে উপজেলা হয়ে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা যান। সেখানে বিকেলে পথসভা শেষে গাজীপুর শহরের রাজবাড়িতে আসেন তারা।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ