মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি কাঠুরিয়া আহত
Published: 2nd, May 2025 GMT
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়ার মধ্যবর্তী রেজু আমতলী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি এক কাঠুরিয়া আহত হয়েছেন। সীমান্ত এলাকাটিতে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
আহত যুবকের নাম মনছুর আলম (৩০)। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের তুলাতলি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে। বিস্ফোরণে তাঁর বাঁ পা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মনছুর আলম প্রায়ই সীমান্তের ওই এলাকা থেকে কাঠ সংগ্রহ করেন। এবারও একই উদ্দেশে সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিলেন। কাঠ সংগ্রহের একপর্যায়ে শূন্যরেখা পার হয়ে তিনি মিয়ানমারের কিছুটা অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েন। সেখানে আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে তিনি আহত হয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসরুরুল হক বলেন, মাইন বিস্ফোরণে এক কাঠুরিয়া আহতের বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তিনি শুনেছেন। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটনাটি ঘটেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।