আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে: প্রেস সচিব
Published: 12th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে দেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সব অধিকার খর্ব করেছিল। এ জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যুক্ত সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছিল। সব দলের সঙ্গে সরকারের কনসালটেশন (পরামর্শ) হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, এই সিদ্ধান্তে দেশের মানুষের সমর্থনও ছিল। তাই কোথাও কোনো আন্দোলন হয়নি।
আজ সোমবার দুপুরে এক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব এসব কথা বলেন। ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত ৯ মাসে কেন আওয়ামী লীগের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ম্যাচুরিটির (পরিপক্বতা) বিষয় আছে। জনগণ আওয়ামী লীগের মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা দেখতে চেয়েছে। কিন্তু দুই হাজার মানুষ মারা গেলেও গত ৯ মাসে তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখিনি। এ জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে।’
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী, জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে তো ২০১২ সালে আওয়ামী লীগই অ্যাকশন নিয়েছে। একাত্তরের পরে তাদের (জামায়াত) ব্যান (নিষিদ্ধ) করা হয়েছে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান হচ্ছে, ইমেডিয়েট পাস্টে (নিকট অতীতে) যা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সেসব অপকর্ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চব্বিশের অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তাহলে কি সরকার একাত্তরকে এড়িয়ে যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘একাত্তর নিয়ে আমরা অনেক স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দিয়েছি। নতুন কিছু বলতে চাই না। একাত্তর আমরা পুরোপুরি ধারণ করি।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, ১৪ দলের কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের কথা বলা হয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনার ভূমিকা বারবার স্পষ্ট হয়েছে। ১৪ দলের অন্য দলগুলোর কথা সেভাবে আসেনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ত্রুটি বা ব্যর্থতা পেলে মন খুলে লেখার আহ্বান জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা কারও মুখ বন্ধ করছি না। সবাইকে অনুরোধ, আপনারা আমাদের কোনো ফেইলিউর (ব্যর্থতা) পান, লেখেন। সমালোচনা করার জায়গা পেলে করুন। আপনার মুখ বন্ধ করা হবে না। মিডিয়া হাউস বন্ধ করা হবে না। কিন্তু মিথ্যা কথা লিখবেন না।’
ভারতে বাংলাদেশি সাতটি টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমরা এটি দেখছি। এতে বোঝা যায়, তারা আসলে সত্য কথাকে নিতে পারছে না। তবে আমরা পাল্টা অ্যাকশনে যাব না। এতে তাদের (ভারত) অ্যাকশনকে বৈধতা দেওয়া হবে। আমরা জানি, তাদের মিডিয়া প্রতিদিন তামাশা করে।’
শেয়ারবাজারের দরপতন নিয়ে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা শেয়ারবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলেছেন। তবে এক ডাকাতকে সরিয়ে আরেক ডাকাতকে আনার মতো ঘটনা যেন না ঘটে। শেয়ারবাজার যাতে ডাকাতদের আড্ডাখানা না হয়, সেটাও চিন্তা করতে হবে।
‘প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি অভিজ্ঞদের এনে শেয়ারমার্কেট সংস্কার করার পক্ষে। কিন্তু ভেস্টেড (স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী) কোনো গ্রুপের কাছে যাতে শেয়ারমার্কেটকে না দেওয়া হয়। ক্লিনআপ প্রসেসটা ঠিকমতো করতে পারলে শেয়ারমার্কেট উঠবে (স্বাভাবিক পর্যায়ে যাবে)’, বলেন প্রেস সচিব।
গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি, গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট ও গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শফিকুল আলম বলেন, ‘এই বিষয়গুলোতে সরকারের কোনো ইনফ্লুয়েন্স আছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ড.
জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘৩০ কর্মদিবসের মধ্যে এটি হবে। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাই।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘এ জন্য হাই পাওয়ার তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁরা দেখবেন, কার কী কী রোল ছিল, কী ত্রুটি ছিল, সব তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দেখছে, সে সময় কাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কারা জেলে ছিল। তাদের প্রত্যেককে পুরোনো ট্রেইল ধরে এগোনো হচ্ছে। এটা খুব কষ্টসাধ্য। সর্বশক্তি দিয়ে এই জায়গায় কাজ করছে তারা। ক্লু বের করার চেষ্টা করছে।’
শফিকুল আলম বলেন, ইউটিউব, ফেসবুক, রিল বা টিকটকে যাঁরা মিথ্যা নিউজ দিচ্ছেন, টিভি বা ইউটিউবে কমেন্ট্রি দিচ্ছেন, তাঁদের কেউ কেউ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিথ্যা কথা বলছেন। তাঁদের কেউ ফ্যাক্ট চেকিং করছে না। আমরা আহ্বান করছি, প্রাইভেট কোনো গ্রুপ যাতে তাদের কমেন্ট্রির ওপর ফ্যাক্ট চেকিং করে। সরকারের তরফ থেকেও কী করা যায়, সেটি তাঁরা ভাবছেন।
প্রেস সচিব আরও বলেন, গত ১৫ বছর সাংবাদিকদের অনেকে সরকারের ভয়াবহ রকমের চামচামি করেছেন। এ জন্য জাতিসংঘের কার্যালয়কে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘চিঠিতে আমরা বলছি, তারা যেন ইনডিপেনডেন্ট (স্বাধীন বিশেষজ্ঞ) এক্সপার্ট নিয়ে এসে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা কীভাবে গত ১৫ বছরে ফেইলিউর হয়েছে, সেটি বের করে। আমরা এই ফেইলিউরগুলো জানতে চাই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র এ জন য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভিডিও বার্তায় দৃঢ় অবস্থান ইরানের সর্বোচ্চ নেতার
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি কোথায়—এমন প্রশ্ন কয়েক দিন ধরেই উঠছিল। ইরান–ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা সংঘাতের সময় মাত্র দুবার বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। তবে জনসমক্ষে আসেননি। তাঁর মৃত্যু নিয়েও শুরু হয়েছিল গুঞ্জন। এরই মধ্যে খামেনির একটি ভিডিও বার্তা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। তাতে তাঁকে ইরানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
খামেনির ভিডিও বার্তা সম্প্রচার করা হয়েছে ২৩ জুন ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি শুরুর দুই দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার। বার্তায় ইসরায়েলের পাশাপাশি দেশটির মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছেন খামেনি। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইরান। এর মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটনের গালে ‘ সজোরে চপেটাঘাত’ করেছে তেহরান।
১৩ জুন ইরান–ইসরায়েল সংঘাত শুরু হয়। প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র শুধু ইসরায়েলকে সহযোগিতা করে যাচ্ছিল। পরে ২১ জুন ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়ে সরাসরি সংঘাতে যুক্ত হয় ওয়াশিংটন। ওই হামলার এক দিন পর কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর প্রথম ভিডিও বার্তায় খামেনি বলেন, এই ‘যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করেছিল, কারণ দেশটি বুঝতে পেরেছিল, তাদের হস্তক্ষেপ ছাড়া ‘জায়নবাদী’ ইসরায়েল ধ্বংস হয়ে যাবে। ইসরায়েল ‘প্রায় ধসে পড়েছে।’ ইরানের হামলায় তারা ‘চূর্ণবিচূর্ণ’ হয়ে গেছে। ইরানের ওপর হামলার জন্য শত্রুদের চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ৮৬ বছর বয়সী এই নেতা।
ইরান কখনো ‘আত্মসমর্পণ’ করবে না বলেও উল্লেখ করেন খামেনি। যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান—তিনটি পরমাণু স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তারও একটি জবাব দেন তিনি। বলেন, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ছিল নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের জন্য। তাদের বোমা ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। তবে খুব বেশি কিছু অর্জন করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
এখনো খামেনিকে হত্যার শঙ্কাভিডিওতে খামেনির পেছনে ছিল বাদামি পর্দা। এক পাশে ইরানের পতাকা। আরেক পাশে তাঁর পূর্বসূরি আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনির ছবি। কোথায় ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। এর পরও খামেনির এই ভিডিও বার্তা ইরানিদের জন্য একটি স্বস্তির বিষয়। কারণ, তাঁর সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানা না গেলেও অন্তত এটুকু জানা গেছে—তিনি বেঁচে আছেন।
খামেনির অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিলেন ইরানের সরকারি কর্মকর্তারাও। যেমন খামেনির মহাফেজখানার দপ্তরের কর্মকর্তা মেহদি ফাজায়েলি। এক টেলিভিশন উপস্থাপক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘সর্বোচ্চ নেতাকে নিয়ে মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন। তিনি কেমন আছেন, আমাদের বলতে পারবেন?’ এর সরাসরি কোনো জবাব দিতে পারেননি ফাজায়েলি। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার দোয়া করা উচিত।’
ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খামেনি একটি বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন। ইলেকট্রনিক যোগাযোগব্যবস্থা থেকে বিরত রাখা হয়েছে তাঁকে। তিনি হত্যার শিকার হতে পারেন—এমন আশঙ্কা থেকে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইরানের পত্রিকা খানেমান–এর সম্পাদক মোহসেন খালিফেহ বলেন, এই অনুপস্থিতির কারণে আর সবার মতো খামেনির মৃত্যু নিয়ে ভয় পেয়েছিলেন তিনিও।
খামেনি ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সব রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে থাকেন। তিনি আড়ালে থাকার সময় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা ও যুদ্ধবিরতির মতো গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তেহরানকে। এ সিদ্ধান্তগুলো কে নিয়েছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক হামজেদ সাফাভি বলেন, দূর থেকেই প্রধান প্রধান সিদ্ধান্ত খামেনি এখনো নিচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।
সাফাভি বলেন, যুদ্ধবিরতি চলাকালেও ইসরায়েল খামেনিকে হত্যার চেষ্টা করতে পারে বলে মনে করেন ইরানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এ জন্য সর্বোচ্চ নেতাকে ঘিরে চরম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। বাইরের জগতের সঙ্গে খামেনির যোগাযোগ কমানো হয়েছে। এমন সংকটের মধ্যে দেশ চালানোর জন্য প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ অন্য নেতাদেরও ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।
ভিন্নমতাবলম্বীদের সমালোচনাএরই মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছে ভিন্নমতাদর্শের গোষ্ঠীগুলো। ইরানের কট্টরপন্থী রাজনীতিক সাঈদ জলিলির নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সমালোচনা করেছে। যুদ্ধবিরতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা শুরুর যে ইঙ্গিত সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তারও নিন্দা জানিয়েছেন তাঁরা।
এই গোষ্ঠীতে রয়েছেন কট্টরপন্থীরা, যাঁদের মধ্যে ইরানের পার্লামেন্ট সদস্য ও ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রয়েছেন। আইআরজিসির ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফুয়াদ ইজাদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, পেজেশকিয়ানের আলোচনার বার্তা এখন মনে করিয়ে দিচ্ছে—ইরানের প্রেসিডেন্টের দেশ পরিচালনার প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক দক্ষতা নেই।
বিরোধী এই গোষ্ঠীর পাল্টা জবাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্টের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা আলী আহমাদনিয়া। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমরা ১২ দিন ধরে দিনরাত ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। এখন কি আপনাদের সঙ্গেও লড়তে হবে, যাঁরা কলম দিয়ে শত্রুর খেলায় ঘুঁটি সাজাচ্ছেন।’
জনসমক্ষে খামেনির না থাকা ইরানের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাজ্যের নীতি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক পরিচালক সানাম ভাকিল। তিনি বলেন, এ সময়টাতে দেশটির নেতাদের ‘চূড়ান্ত সতর্ক’ ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যাচ্ছে।’ নেতাদের এই সতর্কতা, ইরানিদের শঙ্কা, বিরোধীদের সমালোচনার মধ্যেই শেষ পর্যন্ত ভিডিও বার্তা দিয়ে খামেনি বললেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংঘাতে ইরান ‘জয়ী’ হয়েছে।