বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর-কাঠালিয়া সড়কের বাজে সিন্ধুক খালের ওপর নির্মিত আয়রণ সেতু ভেঙে খালে পড়ে গেছে।

শনিবার (১০ মে) রাতে সেতুটি ভেঙে পড়ে। ফলে আমতলী, কলাপাড়া ও গলাচিপা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের অন্তত এক লাখ মানুষ চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

এলজিইডি জানায়, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর-কাঠালিয়া সড়কের বাজে সিন্ধুক খালের ওপর ২০১০ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ১ কোটি টাকা ব্যয়ে আয়রণ সেতু নির্মাণ করে। তৎকালীন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা এই সেতুর ঠিকাদার ছিলেন।

আরো পড়ুন:

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ‘পদ্মা সেতু ব্লকেড’

ট্রলার যখন নদী পারাপারের ভরসা

নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঠিকাদার সেতু নির্মাণ করেন। যে কারণে পাঁচ বছরের মাথায় বিম ভেঙে সেতু নড়বড়ে হয়ে যায়। গত ১০ বছর এই নড়বড়ে সেতু দিয়ে আমতলী, কলাপাড়া ও গলাচিপা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের অন্তত এক লাখ মানুষ ও যানবাহন চলাচল করেছিল।  

স্থানীয় বাসিন্দা জামান মিয়া বলেন, “ভাগ্য ভাল ছিল যে, সেতুটি এমনি এমনি ভেঙে পড়েছে। কোনো গাড়িসহ ভেঙে পড়লে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।” 

কাঠালিয়া এলাকার বাসিন্দা সোবাহান বলেন, “এই সেতু ছিল এক লাখ মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। এখন ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও কৃষকসহ সবাই যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।” 

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু সালেহ বলেন, “এলজিইডিকে একাধিকবার বলেছি, তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সেতুটি নড়বড়ে হয়ে যায়।” 

তিনি আরো বলেন, “পাঁচ বছর আগে সেতুটি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ চিহিৃত করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করতো। বাজে সিন্দুক খালে সরকারিভাবে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।”

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সেতুটির ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো.

ইদ্রিস আলী বলেন, “সেতু ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাব।” 

তিনি বলেন, “আগে থেকে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ওই খালে পাকা সেতু নির্মাণের প্রস্তাব অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প পাশ হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র হলদ য়

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিকে আপ্যায়নের ঘটনায় আদালত পরিদর্শকসহ ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

সন্ত্রাস দমন, বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার আসামি এবং আমতলী পৌর যুবলীগ সভাপতিকে পুলিশের ব্যারাকে নিয়ে আপ্যায়নের অভিযোগে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক বশির আলমসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন এ টি এস আই মামুন, কনস্টেবল আশিস, মো. ফয়সাল, সোহরাব মিয়া ও শাহদাত হোসেন। তাঁদের পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে আদালত থেকে তাঁদের প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন বরগুনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল-মামুন শিকদার।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২ সেপ্টেম্বর আমতলীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ ব্যারাকে মামলার আসামি আরিফ-উল হাসানকে ভাত খাওয়ান আদালত পরিদর্শক বশির আলম। এ সময় তাঁর সঙ্গে ব্যারাকের ভেতরে দুজন নারী, দুজন পুরুষ এবং একটি শিশু ছিল। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও প্রকাশের পর আসামিকে আপ্যায়নের অভিযোগে আদালত পরিদর্শক বশির আলমসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে গতকাল প্রত্যাহার করা হয়।

বরগুনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল-মামুন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, আমতলীতে আদালতের গারদখানার সংস্কারকাজ চলায় আসামিকে পুলিশ ব্যারাকে নেওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে তাঁর খাবারের আয়োজন করা হয়। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসে। তাঁদের নির্দেশে ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামিকে আপ্যায়নের ঘটনায় আদালত পরিদর্শকসহ ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার