মার্কিন মালিকানায় চলে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ
Published: 23rd, May 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ কিনে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান রেডবার্ড ক্যাপিটাল পার্টনার্স। আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা নিজেদের মধ্যে বিক্রি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে। চুক্তির অর্থমূল্য ৫০ কোটি পাউন্ড বা ৬৭ কোটি ডলার।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, টেলিগ্রাফ মিডিয়া গ্রুপ (টিএমজি) কেনার জন্য রেডবার্ড ‘নীতিগতভাবে সম্মত’ হয়েছে। ১৭০ বছরের পুরোনো এই সংবাদমাধ্যমের মুদ্রণ ও অনলাইন সংস্করণের মালিকানা ছিল টিএমজি গ্রুপের।
প্রায় দুই বছর ধরে টেলিগ্রাফ বিক্রির প্রক্রিয়া চলছিল। একপর্যায়ে যুক্তরাজ্যের আগের রক্ষণশীল সরকার সেই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান রেডবার্ডে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের (ইউএই) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া ইনভেস্টমেন্টসের (আইএমআই) বিনিয়োগ রয়েছে। টিএমজি কেনার জন্য ২০২৩ সালের শেষ দিকে রেডবার্ড-আইএমআই একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্যের আগের সরকারের আপত্তির কারণে তা আটকে গিয়েছিল।
আগের যুক্তরাজ্য সরকারের আপত্তি ছিল, আইএমআই আবুধাবিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে সংবাদমাধ্যমের বাক্স্বাধীনতা নেই। তাই তাদের কাছে টেলিগ্রাফ বিক্রি হলে ঐতিহ্যবাহী সংবাদমাধ্যমটির মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে। এ অভিযোগের কারণে সংবাদমাধ্যমটি আবার বিক্রির দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছিল তৎকালীন যুক্তরাজ্য সরকার।
আজ শুক্রবার রেডবার্ড ক্যাপিটাল পার্টনার্স জানায়, টিএমজির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে তারা এখন দ্য টেলিগ্রাফের ‘একক নিয়ন্ত্রণকারী মালিকে’ পরিণত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ১৮৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমটির জন্য ‘উন্নতির নতুন যুগের দরজা খুলে গেছে’।
রেডবার্ড জানিয়েছে, তারা দ্য টেলিগ্রাফকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্প্রসারণের চেষ্টা করবে। সংবাদমাধ্যমটির সম্প্রসারণের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডিজিটাল কার্যক্রম, সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং সাংবাদিকতায় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তারা ‘যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাছাই করা ছোট অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করছে, যারা ছাপা পত্রিকায় দক্ষ এবং দ্য টেলিগ্রাফের সম্পাদকীয় মূল্যবোধ রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।