যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। ট্রাম্প জানান, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেনের সঙ্গে ইতিবাচক ফোনালাপের পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প আরেকবার বাজারকে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। শুক্রবার তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে ১ জুন থেকেই ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হবে। কিন্তু শেষমেশ তিনি আবারও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন। এভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেখান থেকে আবার ফিরে আসার নজির তিনি আগেও স্থাপন করেছেন।

রোববার নিউ জার্সির মোরিসটাউন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘ভন ডার লেন বলেন, তিনি এখন গুরুতর আলোচনায় বসতে চান। তিনি অনুরোধ করেন ১ জুনের পরিবর্তে ৯ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক। আমি তাতে রাজি হয়েছি।’

এর আগে এপ্রিল মাসেও ট্রাম্প ইইউর পণ্যে ২০ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্কের ঘোষণা দিলেও তা কার্যকর করেননি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘আলোচনা দ্রুত শুরু হবে।’ অন্যদিকে ভন ডার লেন এক্সের (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে। ইউরোপ প্রস্তুত; আমরা দ্রুতই দৃঢ়তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই। ভালো চুক্তি করতে হলে আমাদের ৯ জুলাই পর্যন্ত সময় লাগবে।’

এ ঘোষণার পর সোমবার এশিয়ার পুঁজিবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। চীনের সাংহাই সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। তবে হংকংয়ের হ্যাংসেং সূচক শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চলমান বাণিজ্য বাধা ও নিজেদের বাণিজ্যঘাটতি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি ছিল ২৩৬ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।

সম্প্রতি দেশটির অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, বস্ত্রশিল্প যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন নেই। ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আর জুতা বা টি-শার্ট বানাতে চাই না, আমরা সামরিক সরঞ্জাম ও বড় বড় পণ্য বানাতে চাই। কম্পিউটার দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) কাজ করতে চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন য দশম ক ইউর প য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ