শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনার শেষ নেই। প্রিয় তারকাকে দেখার জন্য নানা বয়সের ভক্ত নানা ধরনের পাগলামি করেছেন। শাহরুখ খান, সালমান খানের বাড়িতে জোর করে বা লুকিয়েও প্রবেশ করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন কেউ কেউ!

বাংলা সিনেমার মহানায়িকা সুচিত্রা সেন দীর্ঘ সময় অন্তঃপুরবাসিনী ছিলেন। তার অজস্র ভক্ত ছিল। কিন্তু কোনো ভক্ত কি শাহরুখ-সালমানের ভক্তের মতো অঘটন ঘটিয়েছিলেন? এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন সুচিত্রাকন্যা মুনমুন সেন।

এ অভিনেত্রী বলেন, “আমার মায়ের সঙ্গে কেউ এরকম অভদ্রতা করেননি।” তবে একটি ঘটনা বর্ণনা করে মুনমুন সেন বলেন, “একটি মেয়ে ছিলেন। তিনি প্রত্যেক বছর নিয়ম করে মায়ের জন্মদিনে বাড়ির গেটের বাইরে একরাশ ফুল রেখে যেতেন। কখনো বাড়ির অন্দরে পা রাখার ইচ্ছা পর্যন্ত প্রকাশ করেননি!” 

আরো পড়ুন:

মুকুল দেবের সংসার কেন ভেঙেছিল?

‘আমি আর প্রসেনজিৎ যখন পর্দায় থাকি, তখন সবকিছু ভুলে যাই’

নারী ভক্তটিকে বাড়িতে ডেকেছিলেন মুনমুন। কিন্তু তিনি আসতেন না। তা জানিয়ে মুনমুন সেন বলেন, “তার ভদ্রতাবোধ দেখে অবাক হতাম। আমি তাকে অনেকবার ভিতরে ডেকেছি। কিন্তু পা রাখেননি। মায়ের (সুচিত্রা) শান্তি ভঙ্গ করেননি। এমনকি নিজের নাম পর্যন্ত জানাননি। কেবল ফুল দিয়েই খুশি থাকতেন। যাকে নীরব ভক্ত বলেন।” 

সুচিত্রা সেনের মৃত্যুর পর বাড়িতে পূজা হচ্ছে। সেবারও ওই অচেনা নারী ফুল নিয়ে বাড়ির গেটে দাঁড়িয়েছিলেন। সেদিন মুনমুনের অনুরোধ ফেরাননি। সেন পরিবারের অন্দরমহলে পা রেখেছিলেন। তবে ওই প্রথম, ওই শেষ বলেও জানান মুনমুন সেন।

মুনমুন সেন বলেন, “প্রকৃত ভক্ত কখনো তার প্রিয় অভিনেতা বা অভিনেত্রীর বিরক্তির কারণ হন না। দূর থেকে নীরবে শ্রদ্ধা জানিয়েই খুশি থাকেন।”

১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল, বাংলাদেশের পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন সুচিত্রা সেন। তার বাবা-মায়র নাম করুণাময় ও ইন্দিরা দাশগুপ্ত। তারা মেয়ের নাম রাখেন কৃষ্ণা। কৃষ্ণার পিতামহ জগবন্ধু দাশগুপ্ত সাধ করে ‘রমা’ নাম রাখেন। কিন্তু কে জানত পাবনায় বেড়ে ওঠা সেই রমা দাশগুপ্ত একদিন সুচিত্রা সেন নামে এপার-ওপার বাংলা দাপিয়ে বেড়াবেন! পরবর্তীতে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় পাড়ি জমান।

ক্যারিয়ারের এক পর্যায়ে চলচ্চিত্র থেকে সরে দাঁড়ানোর পর স্বেচ্ছায় অন্তরালে চলে যান সুচিত্রা সেন। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই অভিনেত্রী। তবে আজও বাঙালির মনে চির অমলিন সুচিত্রা সেনের হাসি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ