সাগরে নিম্নচাপ, এমন বৃষ্টি ঝরতে পারে সারা দিন
Published: 29th, May 2025 GMT
রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আর এর প্রভাবেই এই বৃষ্টি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি আজ থাকতে পারে সারা দিন। আগামীকালও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের চার বিভাগেই বর্ষণের সতর্কবার্তা ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ইতিমধ্যে দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চলতি মে মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপ প্রবাহ বয়ে যায়। চলতি মাসেই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে মাসের অর্ধেক সময়ের পর থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হতে শুরু করে। শেষ সপ্তাহের দিকে এসে বৃষ্টি প্রবণতা বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে আবার সাগরে লঘুচাপ দেখা দেয়। লঘুচাপটি নিম্নচাপে এখন পরিণত হয়েছে তবে এ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।
আজ ভোরের দিকে সাগরে নিম্নচাপটি সৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.
আবহাওয়া অধিদপ্তর ইতিমধ্যে বলেছে, সাগরের সৃষ্টি হওয়া এই নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম , খুলনা ,বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কোনো স্থানে ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতি ভারী বৃষ্টি বলা হয়। অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে পাহাড় ধসের আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে আবহাওয়ার বার্তায়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।