মাহাথিরকে শততম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 29th, May 2025 GMT
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আগামী ১০ জুলাই শততম বছরে পা দিতে যাওয়া মাহাথির মোহাম্মদ নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনের ফাঁকে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কয়েক দশকের বন্ধুত্বের কাটানো সময়গুলো নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ২৪ বছর এবং ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মাহাথিরকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমি আপনাকে শততম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই।”
আরো পড়ুন:
আসিয়ানকে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার আহ্বান মালয়েশিয়ার
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার দাবি বায়রার সাধারণ সদস্যদের
৪০ মিনিটের এই বৈঠকে তারা বাংলাদেশের আসিয়ানের সদস্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ কয়েক বছর আগে পূর্ণ সদস্য হওয়ার লক্ষ্যে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যান মালয়েশিয়া।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে আসিয়ানকে একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা মাহাথিরকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“আসিয়ানের সদস্য হতে আমাদের মালয়েশিয়ার সমর্থন প্রয়োজন।”
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার প্রতিও কৃতজ্ঞ। কারণ, দেশটি বিভিন্ন খাতে কয়েক লাখ বাংলাদেশি লোকের কর্মসংস্থান করেছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ মালয়েশিয়া সম্পর্কে জানে। কারণ, মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য সে দেশে যায়। এ সময় মাহাথির বলেন, “অনেক বাংলাদেশি মালয়েশিয়াতেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো করছেন।”
মাহাথির তার ‘লুক ইস্ট’ নীতির কারণে মালয়েশিয়ার সমৃদ্ধির কথা স্মরণ করেন এবং বাংলাদেশকেও একই ধরনের নীতি গ্রহণের আহ্বান জানান।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মালয়েশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও বাংলাদেশ বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যা মালয়েশিয়ার মতো বাংলাদেশেও সুপরিচিত নাম।”
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তার প্রভাব ব্যবহারের জন্য মাহাথিরকে অনুরোধ জানান। মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় মাহাথির বলেন, “তার চিকিৎসকরা যদি অনুমতি দেন তবেই তিনি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন। কারণ, শারীরিক অবস্থার কারণে তার ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।”
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ থ রক সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।