সীমান্ত থেকে অতিরিক্ত সেনা প্রত্যাহার শেষ পর্যায়ে
Published: 30th, May 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তান তাদের সীমান্ত থেকে অতিরিক্ত সেনা সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পেহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছিল দুই দেশ। সীমান্তে উত্তেজনা কমলেও দুই দেশের রাজনৈতিক নেতারা একে অন্যকে দোষারোপ ও কৃতিত্ব দাবি করে বক্তব্য রেখে চলেছেন।
শুক্রবার পাকিস্তানের শীর্ষ এক সামরিক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সাম্প্রতিক বিরোধের কারণে ভবিষ্যতে বড় সংঘাতের শঙ্কা বেড়েছে। চলতি মাসের প্রথমার্ধে এ সংঘাত চলাকালে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে। পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশেদ মির্জা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, দুই দেশের সামরিক বাহিনী সেনা প্রত্যাহার করছে। আমরা ইতোমধ্যে আগের পর্যায়ে পৌঁছেছি।
সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া এগোলেও উত্তেজনার বারুদে আগুন দিতে দুই দেশের নেতাদের চেষ্টা থেমে নেই। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের কানপুরে এক সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি ভারতের অস্ত্রের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এর মাধ্যমে বিশ্ব ভারতীয় অস্ত্রের ক্ষমতা দেখেছে। তিনি জানান, ভারতের অস্ত্র– ব্রাহ্ম ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের সীমানার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। পাকিস্তানকে সতর্ক করে মোদি বলেন, ‘পারমাণবিক বোমা’র হুমকিতে ভারত আর ভয় পায় না; এটা মাথায় নিয়ে ভারত কোনো সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে না।’
অপরদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ‘পানিকে অস্ত্র বানানো’র ভারতীয় চেষ্টার সমালোচনা করেছেন। পাকিস্তান এটা মেনে নেবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সিন্ধু নদের পানি বন্ধ করার মতো ‘লাল রেখা’ অতিক্রমের সুযোগ তারা ভারতকে দেবেন না। সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফায়দার জন্য (পাকিস্তানের) লাখ লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। দ্য ডন অনলাইন জানায়, তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে শাহবাজ এসব কথা বলেন।
গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালায় ভারত। পাল্টা হামলায় জবাব দেয় পাকিস্তানও। উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। তবে এরই মধ্যে সিন্ধুর পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে। এ ছাড়া আকাশসীমা বন্ধ রাখাসহ বেশ কয়েকটি পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে যায় দুই দেশ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।