৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে মিলেছে ১০ কোটি
Published: 31st, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প অনুমোদন ও পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ১৫-২০ বছরের পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা চাওয়া হলেও নালা, কালভার্ট পরিষ্কার করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে আট থেকে ১০ কোটি টাকা।’ সম্প্রতি নগরের টাইগারপাসে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা.
মেয়র বলেন, ‘২০২২ সালে প্রকল্পটি দেওয়া হয়েছে। আজকে হলো ২০২৫ সাল। জলাবদ্ধতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি। খাল-নালা পরিষ্কারের মেশিনারিজ যদি না থাকে কীভাবে জলাবদ্ধতার এত বড় বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব? ১৫-১৬ লাখ টাকায় একেকটা মেশিন আমরা ভাড়া করছি।’
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় বাজেট কী দিয়েছে? পাঁচ কোটি টাকা নালা পরিষ্কার করার জন্য। আড়াই কোটি টাকা একটা বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের জন্য। ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা সংস্কার করার জন্য দিয়েছে। আমরা এগুলো চাইনি। আমরা চেয়েছি মেশিনারিজ কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা।’
চট্টগ্রামের জন্য সরকারি বাজেট বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঢাকা শহরে যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে, চট্টগ্রাম শহরের ৭০ লাখ মানুষের জন্য সে বাজেট দেওয়া হয় কি? ৭০-৮০ লাখ মানুষের বাজেট কি এটাই? সিটি করপোরেশন একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। বছরে শিক্ষা খাতে ৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। স্বাস্থ্যসেবা খাত আছে। দেশের আর কোনো সিটি করপোরেশনে এগুলো নেই। জনগণ থেকে কর নিয়ে কি আমি মানুষকে সেবা দিব? তাহলে কি মানুষকে করের বোঝা চাপাব? আপনাকে তো বাজেট দিতে হবে। সে বাজেট আপনি ঢাকাতে দেন, চট্টগ্রাম শহরে দিতে চান না কেন?’
তিনি বলেন, ‘বরাদ্দ হচ্ছে মাত্র ৫ কোটি। কিন্তু তাতে প্রকল্প ১৪৮টা। মানুষ তো ভাববে যেন ৫ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। এতই হাস্যকর যে, সেটাও আমাদের নয়, জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। বলার পর আমাদের ৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে খালগুলো পরিষ্কার করার জন্য।’
বাংলাদশে জনসংযোগ সমতিি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অভীক ওসমানরে সভাপতত্বিে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ভুঁইয়া নজরুল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্থপতি জেরিনা হোসাইন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নছরুল কদির, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার পাশা, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতেখার উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এএসএম বজলুল হক । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র র জন য পর ষ ক র প রকল প বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।