প্রস্তাবিত বাজেট আগের সরকারেরই ধারাবাহিকতা। রাজস্ব আয়ের সঙ্গে বাজেটের আকারের সম্পৃক্ততা রেখে বাজেট করা উচিত ছিল, যা করা হয়নি। সেই সঙ্গে, বাজেটের আকার আরো ছোট হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর হোটেল সারিনায় বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা সীমিত, কারণ তাদের একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তাদের ক্ষমতায় থাকার মেয়াদের ব্যবধান রয়েছে-এটা মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত-বিগত সরকার বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেটার সঙ্গে রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয়ত-রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে ব্যয় হয়ে যাবে। উন্নয়ন বাজেট দেশের ভেতর বা বাইরে থেকে ঋণ নিয়ে চালাতে হচ্ছে।সরকার দেশের বাইরে থেকে ঋণ নিলে এর বোঝা বাড়তে থাকে এবং বছরের পর বছর দেশের মানুষকে এই সুদ দিতে হয়।এই কারণেই কিন্তু দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ভুগতে থাকে। আর দেশের ভেতরের থেকে নিলে আবার বেশি ক্ষতি। কারণ দেশের ব্যাংক থেকে লোন নিলে ইন্টারেস্ট বেড়ে যায়। আবার ব্যক্তি খাতে লোনও কমে যায়। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ হয় না, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় না, মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না। প্রাইভেট সেক্টর লোন না পেয়ে অনেকে বিনিয়োগও করতে পারে না।”

আরো পড়ুন:

বিএনপির বাজেট প্রতিক্রিয়া বুধবার

সব মিলিয়ে আমরা জুলাই সনদ করব: প্রধান উপদেষ্টা

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, “আগের বাজেট যেভাবে চলে আসছে, সেখান থেকে সংখ্যার তারতম্য হয়েছে কিন্তু বাজেটের প্রিন্সিপাল একই রয়ে গেছে। এটাও গতানুগতিক বাজেট। বিগত সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বের হতে পারেনি। রাজস্ব আয়ের ওপর ভিত্তি করে বাজেট করা উচিত। তাহলে প্রাইভেট সেক্টরে টাকার সরবরাহ থাকবে, বিনিয়োগ থাকবে, ইন্টারেস্ট কমে আসতো, বিদেশি ঋণের পরিমাণ কমে আসতো ও সুদের হারও কম পেমেন্ট করতে হতো। কিন্তু আমরা সেই জায়গা থেকে সরে আসতে পারিনি। আমি মনে করি, এই মৌলিক জায়গায় গলদ রয়ে গেছে।”

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে বৈদেশিক ঋণ ৩ দশমিক ৫ বিলিয়নের মতো। আমি মনে করি, বিদেশি ঋণ ও রাজস্ব আয়কে মাথা রাখলে এই বাজেটের আকার আরো ছোট হওয়া উচিত ছিল। গুণগত দিক থেকে এই বাজেটে কোনো পরিবর্তন হয়নি, শুধু সংখ্যায় সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। কাঠামো কিন্তু একই রয়েছে।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ