নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলছে ভোট
Published: 3rd, June 2025 GMT
দীর্ঘ ছয় মাস ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে যে অস্থিরতা চলছে, তার অবসান ঘটাতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আজ মঙ্গলবার ভোট দিচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকেরা।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের হঠাৎ সামরিক আইন জারির জেরে দক্ষিণ কোরিয়ায় এ রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়।
ভোটে যেই নির্বাচিত হন, তাঁকে দেশ পরিচালনায় কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। নতুন প্রেসিডেন্টকে একদিকে সামরিক শাসনের প্রচেষ্টায় গভীরভাবে বিচ্ছিন্ন ও আঘাতপ্রাপ্ত সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, অন্যদিকে সামাল দিতে হবে রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদী আর্থিক নীতির ধাক্কা মার্কিন মিত্রদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার ওপরও পড়েছে।
স্থানীয় সময় আজ সকাল ছয়টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, রাত আটটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। এবার ভোটার উপস্থিতি বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজারের বেশি ভোটারের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আগাম ভোট দিয়েছেন।
দেশজুড়ে ১৪ হাজার ২৯৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী উদারপন্থী ডেমোক্রেটিক পার্টির লি জায়ে-মিয়ং এবং রক্ষণশীল পিপল পাওয়ার পার্টির কিম মুন-সু—উভয়েই দেশে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁদের মতে, নতুন একটি গণতান্ত্রিক দেশ ও শিল্প শক্তিতে রূপান্তরের সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক মডেল গড়ে উঠেছিল, তা এখন আর দেশের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না।
আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি০৩ ডিসেম্বর ২০২৪রাত আটটায় ভোট গ্রহণ শেষে তিনটি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালিত বুথ ফেরত জরিপ প্রকাশ করা হবে। আর ব্যালট প্রথমে মেশিনে বাছাই ও গণনা করা হবে, এরপর নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কর্মকর্তারা নিজেদের হাতে তিনবার তা যাচাই করবেন।
ভোটের ফলাফল কতক্ষণে পাওয়া যাবে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ২০২২ সালে ভোট শেষ হওয়ার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশন আগামীকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে। বিজয়ী প্রার্থী নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সে দিনই শপথ গ্রহণ করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নত ন প র স ড ন ট ভ ট গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের আয়কর নথি তলবের নির্দেশ
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবু হেনা মোহাম্মদ মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল, তাঁর স্ত্রী কাশমিরি কামাল এবং তাঁদের দুই মেয়ে কাশফি কামাল ও নাফিসা কামালের আয়কর নথি তলবের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। দুদকের পৃথক চারটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ এ আবেদনগুলো করেন। পরে আদালত তা মঞ্জুর করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজির আহমেদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
লোটাস কামালের আয়কর নথি তলবের আবেদনে বলা হয়, লোটাস কামালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর নামে ৩২টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন করার অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে।
কাশমিরি কামালের আবেদনে বলা হয়, মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ৪৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার ১৪৬ টাকা অর্জন করেছেন। এই অবৈধ সম্পদ তিনি তাঁর স্ত্রীর নামে দেখিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে উক্ত প্রতিষ্ঠান এবং নিজ নামে মোট ২০টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ২৯ কোটি ৭৩ লাখ ১০ হাজার ২০৭ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে সন্দেহজনক অসংখ্য লেনদেন করার অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে।
কাশফি কামালের আয়কর নথি তলবের আবেদনে উল্লেখ করা হয় যে মুস্তফা কামাল তাঁর অবৈধভাবে অর্জিত ৩১ কোটি ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৯৫ টাকা বৈধ করতে নিজ কন্যা কাশফি কামালের নামে দেখিয়েছেন। এ ছাড়া কাশফি কামালের নামে খোলা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ মোট ৩৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৮৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৪৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন।
নাফিসা কামালের আবেদনে দাবি করা হয় যে মুস্তফা কামাল তাঁর অবৈধ ৬২ কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৬ টাকা বৈধ করতে মেয়ে নাফিসা কামালের নামে স্থানান্তর করেছেন। এখানেও নাফিসা কামালের নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। তাঁর নামে মোট ১৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৯৯ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে, যা নিয়ে তদন্ত চলছে।