রংপুর মহানগরীর একটি আলুর হিমাগার থেকে প্রায় সাত হাজার কেজি দই-মিষ্টি জব্দ হয়েছে। এ ঘটনায় হিমাগার কর্তৃপক্ষ ও মজুতকারী প্রতিষ্ঠানের মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

ঈদে বিক্রির জন্য দই-মিষ্টি হিমাগারে মজুত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অভিযানে থাকা সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম।

বুধবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর নগরীর ময়নাকুটি কোল্ড স্টোরেজে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনী।

আরো পড়ুন:

অবৈধভাবে মধুমতির বালু উত্তোলন, জরিমানা আদায়

মুদি দোকানে যৌন উত্তেজক ওষুধ, জরিমানা

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রংপুর নগরীর পশুরাম এলাকার ময়না কুটি কোল্ড ষ্টোরেজে ৬ হাজার ৭৮০ কেজি দই, রস মালাইসহ বিভিন্ন পদের মিষ্টি মজুদ করে রংপুরের মিষ্টান্ন জাতীয় খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পুষ্টি। ঈদে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় লম্বা সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি হিমাগারে মিষ্টি ও দই মজুত করে আসছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল ঈদে ক্রেতাদের কাছে এই দই-মিষ্টি বিক্রি করা।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হিমাগারে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। জব্দ করা দই, মিষ্টি মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।

পুষ্টির পরিচালক মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, “আগামী ঈদকে সামনে রেখে আমরা  দই ও মিষ্টি মজুত করেছি। আমাদের এই কাজ করা ঠিক হয়নি।”

কতদিন আগে এগুলো মজুত করা হয়েছে এক সেনা কর্মকর্তার এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “গত মে মাসের ১২ তারিখে সবশেষ মজুত করা হয়েছে। যা স্বাস্থ্যসম্মত না। আমাদের রাখাটা ঠিক হয়নি।” ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রংপুরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা এখানে অভিযান পরিচালনা করছি। এখানকার যে ঘটনা তাতে ভোক্তার সঙ্গে চরম পর্যায়ের প্রতারণা করা হচ্ছে। আমরা এখানে ৬ হাজার ৭৮০ কেজি মিষ্টি এবং দই পেয়েছি যা দীর্ঘদিন ধরে এখানে মজুত করা হচ্ছিল। সব দই এবং মিষ্টি নষ্ট করা হয়েছে। হিমাগার মালিকে এক লাখ এবং দই, মিষ্টি প্রস্তুতকারক কোম্পানি পুষ্টিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, “আমরা গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছি, এখানে ঈদকে সামনে রেখে লম্বা সময় ধরে মিষ্টি জাতীয় খাদ্যদ্রব্য মজুত করে রাখা হয়েছে। যাতে ঈদে অধিক চাহিদার সময় এই দই-মিষ্টি বাজারে বিক্রি করতে পারে। আলুর গুদামে এসব দই মিষ্টি রাখা ছিল। সংঙ্গত কারণেই এটা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমরা মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এখানে এসেছি।” 

ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দই ম ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ