বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে ৩৫ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় নিয়ে ঢাকার গুলশানের পথে রওনা হয়েছেন কৃষক সোহাগ মৃধা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে তিনটি মিনি ট্রাকে ৫০ জন বিএনপির কর্মী নিয়ে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রাম থেকে রওনা হন তিনি।

সোহাগ মৃধার সঙ্গে যাওয়া ৫০ জনের সবার গায়ে রয়েছে সাদা রঙের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির লোগো সম্বলিত গেঞ্জি। সঙ্গে রয়েছে অভিজ্ঞ ব্যান্ড দল। তাদের ঢাকের বাদ্য, বাঁশির সুর এবং কাঁশার ঝনঝনিতে মুখরিত হয়েছে পুরো এলাকা। যে ট্রাকগুলোতে তারা গেছেন তার প্রত্যেকটি সাজানো হয়েছে তাজা ধানের শীষ দিয়ে। ট্রাকগুলোর সামনে রয়েছে জাতীয় ও দলীয় পতাকাসহ ঈদ উপহার সম্বলিত বিএনপির ব্যানার। 

আরো পড়ুন:

আমিরাতে শহীদ জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত

রাজনীতিকদের উদ্দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল
আ.

লীগের পথে হাঁটলে ইতিহাস আপনাদেরও ক্ষমা করবে না

ছয় বছর আগে স্থানীয় চৈতা বাজার থেকে একটি গাভী কিনেছিলেন সোহাগ মৃধা। কয়েক দিনের মধ্যেই গাভীটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটি একটু বড় হলেই তিনি গাভীটি বিক্রি করে দেন। এরপর থেকেই বাছুরটিকে লালন পালন শুরু করেন সোহাগ মৃধা। ছয় বছর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো অতিযত্নে লালন করায় ষাঁড়টির ওজন হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কেজি বা ৩৫ মণ।

কালো হওয়ায় ভালোবেসে দৃষ্টিনন্দন ষাঁড়টির নাম সোহাগ মৃধা রাখেন ‘কালো মানিক’। ষাঁড়টি বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দেওয়ার আশা করেন তিনি। তবে, ষাঁড়টি বেগম খালেদা জিয়া গ্রহণ করবেন কিনা সেটা নিয়ে অনিশ্চিত সোহাগ। 

ইচ্ছা অনুযায়ী আজ সকালে বেগম খালেদা জিয়ার ঢাকার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সোহাগ ও তার দলবল। 

বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে ষাঁড় নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে সোহাগের বাড়িদে আসেন পার্শ্ববর্তী গ্রাম শ্রীনগরের রবিউল হোসেন। তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার জন্য গরু উপহার হিসেবে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে এখানে এসেছি। সোহাগ মৃধার জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন দেখে মনটা ভরে গেছে।” 

সুবিদখালী গ্রামের আতিক মিয়া বলেন, “সোহাগ মৃধা অনেক দরিদ্র কৃষক। আসলে বড় মন না থাকলে এভাবে বড় ত্যাগ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ঢাক ঢোল এবং নাচ গানে মেতে ষাঁড়টি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমা আশা করছি, বেগম খালেদা জিয়া ষাঁড়টি গ্রহণ করবেন।”

কৃষক সোহাগ মৃধা বলেন, “২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ নেত্রীকে এক কৃষক একটি গরু উপহার দিয়েছিলেন। তখনই পন করি আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও আমি আমার ষাঁড়টি উপহার দেব। এই ষাঁড়টি নিজের সন্তানের মতো যত্ন করে লালন পালন করেছি। দেশীয় খাবার খাইয়ে ষাঁড়টি বড় করেছি। নেত্রীর জন্য ষাঁড়টি নিয়ে রওনা দিতে পেরে আমি শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি এটি গ্রহণ করুক বা না করুক আমি ষাড়টি নিয়ে তার বাসভবন পর্যন্ত যাব।” 

আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বলেন, “সোহাগ মৃধা গরিব মানুষ। তিনি ষাঁড়টি বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দেওয়ার জন্য পন করেছিলেন। আমরা ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি।” 

মির্জাগঞ্জ প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন মাসুদ বলেন, “সবুজ ঘাস ও খড়কুটো খাইয়ে ষাঁড়টিকে প্রস্তুত করেছেন সোহাগ মৃধা। ‘কালো মানিক’ জেলার সবচেয়ে বড় গরু। ষাঁড়টি লালন পালনে তাকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গর ব গম খ ল দ উপহ র দ ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা