প্রতিবেশী—বাড়ির পাশে থাকা সেই মানুষ, যার হাসি দিনকে উজ্জ্বল করে, যার সাহায্য কষ্টের মধ্যে আশার রশ্মি জাগায়। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, এই প্রতিবেশী আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

ইসলামে প্রতিবেশীর মর্যাদা এতটাই উচ্চ যে মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জিব্রাইল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর প্রতি ভালো ব্যবহারের উপদেশ দিতে থাকলেন, এমনকি আমি ভেবেছিলাম, তিনি হয়তো প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেবেন’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,০১৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬২৪)।

মহানবী (সা.

)-এর সুন্নাহ থেকে ১০টি শিক্ষা জেনে নিই, যা প্রতিবেশীর সঙ্গে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়তে আমাদের সাহায্য করবে।

তিনি আবু জর (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘যখন তুমি ঝোল রান্না করো, তাতে পানি বাড়িয়ে দাও এবং প্রতিবেশীকে দাও।’(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬২৫)

হাসি: ভালোবাসার প্রথম ধাপ

নবীজি (সা.)-এর মুখে সব সময় হাসি ফুটে থাকত। আবদুল্লাহ ইবনে হারিস (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজির চেয়ে বেশি হাস্যোজ্জ্বল কাউকে দেখিনি’ (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ৩৬৪)। তিনি বলেছেন, ‘মুসলিম ভাইয়ের মুখে হাসি ছড়ানো একটি সদকা’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৯৫৬)।

প্রতিবেশীর দরজায় যাওয়ার আগে মুখে হাসি মেখে যান। এই ছোট্ট হাসি পাড়ায় আপনার ভালোবাসার বীজ বুনে দেবে।

উপহার: হৃদয়ের দূরত্ব কমায়

নবীজি উপহার দেওয়াকে বলেছেন ভালোবাসার সেতু। তিনি বলেন, ‘তোমরা একে অপরকে উপহার দাও, এতে তোমাদের মাঝে ভালোবাসা বাড়বে’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৭৫১৮)। আয়েশা (রা.)-কে তিনি বলেছিলেন, ‘তোমার নিকটতম প্রতিবেশীকে উপহার দাও’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৫৮৪)।

একটি ফুলের তোড়া, হাতে বানানো মিষ্টি বা ছোট্ট একটি কার্ড—এই সামান্য উপহার প্রতিবেশীর হৃদয়ে আপনার জায়গা করে দেবে।

আরও পড়ুনসুরা কারিয়াতে কিয়ামতের ভয়াবহতার বর্ণনা০৪ মে ২০২৫একটি ফুলের তোড়া, হাতে বানানো মিষ্টি বা ছোট্ট একটি কার্ড—এই সামান্য উপহার প্রতিবেশীর হৃদয়ে আপনার জায়গা করে দেবে।

খাবার ভাগাভাগি

প্রতিবেশীর পেটে ক্ষুধা থাকলে আমাদের ঘরে শান্তি আসে না। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সে মুমিন নয়, যে নিজে পেট ভরে খায়, অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস: ২১৬৬)।

তিনি আবু জর (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘যখন তুমি ঝোল রান্না করো, তাতে পানি বাড়িয়ে দাও এবং প্রতিবেশীকে দাও’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬২৫)। রান্নাঘরে একটু বেশি খাবার তৈরি করুন, প্রতিবেশীর দরজায় পৌঁছে দিন। এই ছোট্ট কাজ তাদের মন ভরাবে।

মধুর কথায় মনে দাগ কাটে

‘যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন ভালো কথা বলে বা চুপ থাকে’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০১৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৭)। নবীজির এই কথা আমাদের শেখায়, প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলার সময় মধুর ও সম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করতে। একটি সুন্দর কথা তাদের দিনকে রাঙিয়ে দিতে পারে।

অতিথির জন্য দরজা খোলা রাখুন

নবীজি বলেছেন, ‘যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০১৮)। প্রতিবেশীকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান, এক কাপ চা বা কফির সঙ্গে গল্প করুন। এই আতিথেয়তা তাদের মনে আপনার জন্য ভালোবাসা জাগাবে।

আরও পড়ুনমোগল শাসকদের হজের কৌশল১৬ মে ২০২৫নবীজি বলেছেন, ‘যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।’(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০১৮)

চোখে শান্তি দেয় পরিচ্ছন্নতা

কোরআন আমাদের পরিচ্ছন্ন থাকতে বলে: ‘আল্লাহ পরিচ্ছন্নদের ভালোবাসেন’ (সুরা তাওবা: ১০৮)। নবীজি বলেছেন, ‘পরিচ্ছন্নতা ইমানের অংশ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২২৩)। আপনার বাড়ি, উঠান, এমনকি রাস্তার সামনের অংশ পরিষ্কার রাখুন। এটি প্রতিবেশীর চোখে শান্তি দেবে এবং পাড়ার সৌন্দর্য বাড়াবে।

বিশ্বস্ততা নিরাপত্তার ভিত

প্রতিবেশীর কাছে আপনি হবেন তাদের বিশ্বাসের আশ্রয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তারাই ফিরদাউসের উত্তরাধিকারী’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)। প্রতিবেশীর জিনিসের দায়িত্ব নিলে তা ফিরিয়ে দিন, তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করুন। এই বিশ্বস্ততা তাদের মনে আপনার প্রতি শ্রদ্ধা জাগাবে।

খোঁজখবর নিন

নবীজি প্রতিবেশীর অবস্থা জানতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিবেশী যেন প্রতিবেশীর কাছে ক্ষুধার্ত না থাকে’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস: ২,১৬৬)। বয়স্ক, অসুস্থ বা একা থাকা প্রতিবেশীর খোঁজ নিন। একটি ফোন কল বা দরজায় টোকা তাদের মনে আনন্দ জাগাতে পারে।

শান্তি বজায় রাখুন

নবীজি বলেছেন, ‘যে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়, তার জান্নাতে প্রবেশ নেই’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৬)। জোরে গান বাজানো, রাতে হট্টগোল বা অসময়ে বিরক্ত করা এড়িয়ে চলুন। প্রতিবেশীর শান্তি বজায় রাখুন, এতে পাড়া হবে সুখের আবাস।

আরও পড়ুননবীদের জীবন থেকে শিক্ষা২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫জোরে গান বাজানো, রাতে হট্টগোল বা অসময়ে বিরক্ত করা এড়িয়ে চলুন। প্রতিবেশীর শান্তি বজায় রাখুন, এতে পাড়া হবে সুখের আবাস।

সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন

প্রতিবেশীর বিপদে পাশে দাঁড়ানো ইমানের পরিচয়। নবীজি বলেছেন, ‘তোমার জন্য যা পছন্দ করো, তোমার প্রতিবেশীর জন্যও তা-ই পছন্দ করো’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৫)। গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হলে তার জন্য জাম্পার কেব্‌ল নিয়ে ছুটে যান, বাচ্চা বিপদে পড়লে তাকে উদ্ধার করুন। এই সাহায্য প্রতিবেশীর হৃদয়ে আপনাকে চিরস্থায়ী জায়গা করে দেবে।

একটি নতুন শুরু

পবিত্র কোরআন আমাদের শেখায়, ‘পিতা-মাতা, আত্মীয়, এতিম, গরিব, নিকটবর্তী প্রতিবেশী এবং দূরের প্রতিবেশীর প্রতি ভালো আচরণ করো’ (সুরা নিসা: ৩৬)। প্রতিবেশী আমাদের জীবনের অংশ, তাদের হাসি আমাদের ঘরকে আনন্দময় করে। নবীজি (সা.)-এর এই সুন্নাহগুলো আমাদের শেখায় কীভাবে একটি সাধারণ হাসি, একটি উপহার বা একটি সাহায্যের হাত আপনার প্রতিবেশকে সুন্দর করে তুলতে পারে। আজই শুরু করুন।

ডিসকভারিং ইসলাম আর্কাইভ থেকে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহ হ ব খ র ত দ র মন র জন য আল ল হ আম দ র বল ছ ন স ন দর উপহ র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিদিন কেন মৃত্যুকে স্মরণ করতে হবে

মৃত্যু জীবনের একটি অবশ্যম্ভাবী সত্য, যা প্রত্যেকটি মানুষের জন্য নির্ধারিত। ইসলামে মৃত্যুকে ভয়ের বিষয় হিসেবে নয়; বরং আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার একটি স্বাভাবিক ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৫)

মৃত্যুর স্মরণ মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক অনুশীলন, যা জীবনের উদ্দেশ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয় এবং আমাদের পার্থিব লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখে।

মৃত্যু: মুমিনের জন্য স্বস্তি

পৃথিবী একটি পরীক্ষার ক্ষেত্র, যেখানে মানুষ নানা দুঃখ-কষ্ট, অভাব, প্রিয়জনের মৃত্যু, দারিদ্র্য ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। মুসলিমদের জন্য এ পরীক্ষা হলো আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার মাধ্যমে জীবন যাপন করা।

কোরআনে বলা হয়েছে, ‘(আল্লাহ) যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি তোমাদের পরীক্ষা করেন, তোমাদের মধ্যে কে উত্তম কাজ করে।’ (সুরা মুলক, আয়াত: ২)

আনন্দের ধ্বংসকারীকে (মৃত্যুকে) বেশি বেশি স্মরণ করো। তিরমিজি, হাদিস: ২৩০৭

মৃত্যু মুমিনের জন্য একটি স্বস্তি। এটি পার্থিব পরীক্ষা ও কষ্ট থেকে মুক্তি দেয় এবং আল্লাহর রহমতের আলিঙ্গনে নিয়ে যায়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মৃত্যুর মাধ্যমে স্বস্তি পায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৫০৭)।

এমনকি নবীজি (সা.)-এর জীবনেও এ সত্য প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর সময় মৃত্যুর ফেরেশতা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁকে মৃত্যু বিলম্বিত করার সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনমৃত্যু থেকে পালানোর পথ নেই১৮ মার্চ ২০২৫মৃত্যুকে স্মরণ করার গুরুত্ব

মৃত্যু স্মরণ একটি গভীর আধ্যাত্মিক অনুশীলন। যখন আমরা কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু দেখি, তখন পার্থিব বিষয়গুলো তুচ্ছ মনে হয়। আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে পুনর্বিবেচনা করি।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘হৃদয় মরিচার মতো মলিন হয়।’ লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ‘কীভাবে তা পরিষ্কার করা যায়?’ তিনি বললেন, ‘মৃত্যু স্মরণ ও কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে।’ (নাহজুল ফাসাহা)।

এ ছাড়া তিনি বলেছেন, ‘আনন্দের ধ্বংসকারীকে (মৃত্যুকে) বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৩০৭)

হজরত আলী (রা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রায়ই মৃত্যুকে স্মরণ করে, সে অল্প সম্পদেও সন্তুষ্ট থাকে। সে কখনো লোভী বা কৃপণ হয় না।’ (বিহারুল আনওয়ার)

মৃত্যুর জন্য কী কামনা করা যায়

ইসলামে আত্মহত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাই কোনো বিপদ বা কষ্টের কারণে মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করা অনুমোদিত নয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন বিপদের কারণে মৃত্যু কামনা না করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৫১)।

তবে শহীদ হওয়ার জন্য দোয়া করা, অর্থাৎ আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণের জন্য প্রার্থনা করা ইসলামে অনুমোদিত।

ইসলামের দৃষ্টিকোণে মৃত্যু জীবনের সমাপ্তি নয়; বরং এটি পার্থিব জীবন থেকে চিরস্থায়ী জীবনের দিকে একটি সেতু। মৃত্যু মুমিনের জন্য এটি আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার একটি সুযোগ।মৃত্যুই শেষ কথা নয়

ইসলামের দৃষ্টিকোণে মৃত্যু জীবনের সমাপ্তি নয়; বরং এটি পার্থিব জীবন থেকে চিরস্থায়ী জীবনের দিকে একটি সেতু। এটি ভয় বা দুঃখের বিষয় হলেও মুমিনের জন্য এটি আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার একটি সুযোগ। মৃত্যু স্মরণ ও এর জন্য প্রস্তুতি আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ করে।

বিপদে পড়লে মৃত্যু স্মরণের দোয়া আমাদের ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে সাহায্য করে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা বিপদে পড়ে বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আমরা আল্লাহর জন্য এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাব।)’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৬)

এ আয়াত মৃত্যুর সংবাদ শোনার সময়ও পাঠ করা হয়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে বিপদ আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে এবং তিনি আমাদের সামর্থ্যের বাইরে পরীক্ষা দেন না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬)।

প্রতিটি বিপদের মধ্যে আমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এ বিপদ ক্ষণস্থায়ী। কারণ, আমরা আল্লাহর কাছে ফিরে যাব।

আরও পড়ুনসন্তান জন্মের আগে মৃত্যু কামনা করেন নবীর মা৩১ মে ২০২৫কয়েকটি দোয়া

মৃত্যু ভাবাপন্ন বিপদ হলে: কঠিন বিপদের সময় পাঠ করা যায়, তা হলো নবীজি (সা.)-এর শেখানো: ‘হে আল্লাহ, যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর, ততক্ষণ আমাকে জীবিত রাখো এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য উত্তম, তখন আমাকে মৃত্যু দাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৫১)

মৃত্যু নিকটবর্তী হলে: মৃত্যুর সময় শুধু আল্লাহই জানেন। তবে আমরা বা আমাদের প্রিয়জন মৃত্যুর কাছাকাছি থাকি এবং ভয় বা উদ্বেগ অনুভব করি, তবে এই দোয়া পাঠ করা যায়: ‘হে আল্লাহ, মৃত্যুর যন্ত্রণা ও কষ্ট থেকে আমাকে সাহায্য করো।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৯৭৮)।

নবীজি (সা.) নিজেও তাঁর মৃত্যুর সময় এই দোয়া পাঠ করেছিলেন।

হে আল্লাহ, যতক্ষণ জীবন আমার জন্য কল্যাণকর, ততক্ষণ আমাকে জীবিত রাখো এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য উত্তম, তখন আমাকে মৃত্যু দাও।সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৫১

সহজ মৃত্যুর জন্য দোয়া: নবীজি (সা.) একটি দীর্ঘ দোয়ার শেষে বলেছেন, ‘এবং আমার মৃত্যুকে আমার জন্য স্বস্তির উৎস করো, যা আমাকে সব অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৮৮)

এখানে সহজ মৃত্যু বলতে পার্থিব অর্থে আরামদায়ক মৃত্যু (যেমন ঘুমের মধ্যে মৃত্যু) বোঝায় না; বরং এটি বোঝায় মৃত্যুর ফেরেশতার আগমন থেকে শুরু করে পরকালে স্থানান্তর পর্যন্ত একটি সহজ প্রক্রিয়া।

মৃত্যুর কঠিন পরীক্ষা থেকে আশ্রয়: একটি দোয়ায় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে অলসতা, বার্ধক্য, কাপুরুষতা, অক্ষমতা এবং জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৯১)

মৃত্যুর সময় শয়তান থেকে বাঁচতে: নবীজি (সা.) এ–সময় দোয়া করেছেন, ‘আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি যেন শয়তান আমার মৃত্যুর সময় আমাকে ক্ষতি করতে না পারে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫৫২)

ইসলামে মৃত্যুকে ভয়ের বিষয় হিসেবে নয়; বরং আল্লাহর সঙ্গে পুনর্মিলনের একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। নিয়মিত মৃত্যু স্মরণ আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়, লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখে এবং আমাদের ভালো কাজের পথে রাখে।

আরও পড়ুনমৃত্যু কি শেষ, মৃত্যু আসলে কী৩১ জুলাই ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ